মে দিবস, ভালো নেই ঈশ্বরদী স্টেশনের কুলিরা

  • আলমাস আলী, ঈশ্বরদী | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৪, ০৯:৩৪ পিএম
মে দিবস, ভালো নেই ঈশ্বরদী স্টেশনের কুলিরা

ঈশ্বরদী: বুধবার মহান মে দিবস। প্রতিবছরই শ্রমিক দিবস আসে কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন নেই ঈশ্বরদী জংশন রেল স্টেশনের  কুলিদের। সবার পরনে লাল রঙের হাফ হাতা শার্ট। কেউ ট্রলি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন, আবার কেউবা মাথায় মালামাল নিয়ে ওভার ব্রিজ পার হচ্ছেন ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন প্ল্যাটফর্মের ভেতরে ও বাইরে। উদ্দেশ্য কোনো যাত্রীর সঙ্গে থাকা ব্যাগ, মালামাল ট্রলিতে নিয়ে ট্রেন পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া বা ট্রেন থেকে জিনিসপত্র স্টেশনের বাইরে এনে দেওয়া। বিনিময়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকা মজুরি পাওয়া। সবাই তাদের কুলি বলেই ডাকেন। এমন প্রায়  ৮০ থেকে ১০০ জন কুলি কাজ করেন এ স্টেশনে।

মঙ্গলবার ( ৩০ এপ্রিল) দুপুরে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে প্রবেশ করতেই দেখা মিললো এসব মানুষের। সবাই চেষ্টা করছেন প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত রিকশায় আসা যাত্রীদের জিনিসপত্র নিজের ট্রলিতে তুলে ট্রেন পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার।

এদিকে, যখন স্টেশন এলাকায় থাকে  যাত্রীদের ভিড়। এসময় কুলিদের আয়ও ভালো হওয়ার কথা। কিন্তু ভিন্ন কথা বলছেন তারা। তারা বলছেন, ‘আগের মতো আয় নেই। যাত্রীদের বেশিরভাগই নিজেদের জিনিসপত্র নিজেরাই প্ল্যাটফর্ম নিয়ে যাচ্ছেন। যারা কুলির সহায়তা নেন তারাও বেশি টাকা দিতে চান না।’

দীর্ঘদিন কুলির কাজ করা এসব শ্রমিক বলছেন, ‘অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা এ কাজ করেন। কেননা দীর্ঘদিন ধরে এ পেশায় থাকায় তারা আর পেশা পরিবর্তন করতে পারছেন না। আবার অনেকের বয়স বেশি হওয়ায় নতুন কোনো কাজও করতে পারেন না। সারাদিন কাজ করে যা আয় হয় তাতে সংসার চালানোই কষ্টকর।’

দীর্ঘ সাত বছর ধরে ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনে কুলির কাজ করেন সাজদ্দি। তিনি জানান,  স্টেশনে চব্বিশ ঘন্টা পরে দুই  শিফটে কুলিদের কাজ চলে। প্রথম শিফটের কাজ শুরু হয় দুপুর ২ টা থেকে পরদিন দুপুর ২ টায় শিফট শেষ হয়। আবার দুপুর দুইটা থেকে পরের শিফটের কাজ শুরু হয়।   বেশ আক্ষেপ নিয়ে তিনি  বলেন, ‘গরিব মানুষ আমরা। কিছু কইরা তো খাইতে হইবো। সারাদিন রাত ২৪ ঘন্টা শিফট খাইটা চারশ থেকে পাঁচশত  টাকা ইনকাম করি। কোনো দিন সেটাও হয় না।  সংসার চালাইতেই জীবন যায়।’

মিনহাজ  নামের আরেক কুলি বলেন, ‘ইনকাম কমে গেছে। লোকজন যা আসে নিজেগো মালামাল নিজেরাই নিয়ে যায়। আমাগোরে টাকা দিতে চায় না। দিলেও ৪০-৫০ টাকা দিবার চায়। বৌ, পোলা-পান নিয়ে চলাই কষ্ট।’

ইউসুফ নামের আরেক কুলি বলেন, ‘আয়-রোজগার তেমন নেই।  কষ্টের সংসার, কষ্টেই চলে।’

এমএস

Link copied!