পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণের সড়কে ২৮ মৃত্যু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২২, ০৩:০২ পিএম
পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণের সড়কে ২৮ মৃত্যু

শরীয়তপুর: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে গত ২৬ জুন থেকে। সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ; কিন্তু বাড়েনি মহাসড়কের প্রশস্ততা। ফলে সরু রাস্তায় যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের হিসাব মতে, পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরুর পর থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের মহাসড়কে ছোট-বড় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন নারী এবং শিশুসহ ২৮ জন, যার মধ্যে ২০ এবং ২১ জুলাই ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সব থেকে বড় দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে বাকেরগঞ্জ ও উজিরপুরে। এই দুই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন। তাছাড়া যতগুলো দুর্ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগ বরিশাল জেলার সীমান্ত গৌরনদীর ভুরঘাটা থেকে বাকেরগঞ্জের লেবুখালীর মধ্যে।

গত ২১ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর নামক এলাকায় বেপরোয়া গতির ট্রাকের চাপায় সাইফুল ইসলাম নামে এক মোটরসাইকেল চালক ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। ২০ জুলাই একই মহাসড়কের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে বিআরটিসি বাসের চাপায় ছয় যাত্রী নিহত হন। 

১৬ জুলাই ভোরে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের মৌকরণ ব্রিজের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে পড়ে ২০ যাত্রী আহত হয়। ১৬ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভোলা-চরফ্যাশন সড়কের ডা. আজাহার উদ্দিন কলেজের কাছে বাসে উঠতে গিয়ে ছিটকে রাস্তায় পড়ে এক বৃদ্ধ নিহত হন।

ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে হঠাৎ করে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় অনেকটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এই অঞ্চলের মানুষ। দাবি তুলেছেন নিরাপদ সড়কের।

নিরাপদ সড়ক চাই বরিশালের আহ্বায়ক রুহুল আমিন বলেন, পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির গতিসঞ্চার করেছে। সেতু উদ্বোধনের পর এই অঞ্চলে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে আগে যাওয়ার প্রবণতা। চালকরা কত দ্রুত বরিশাল থেকে ঢাকা বা ঢাকা থেকে বরিশালে পৌঁছাতে পারে সেই প্রতিযোগিতা বেড়েছে; কিন্তু সড়ক প্রশস্ত হয়নি। বর্তমান সময়ে সড়ক দুর্ঘটনার এটি প্রধানতম কারণ। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা থেকে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েসহ ফোর লেন সড়কে উন্নীত করার পাশাপাশি মহাসড়ক সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা জরুরি হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে যানজট এড়াতে মহাসড়কের পাশের হাট-বাজার, সড়কের উপর নির্মিত বাস ও পরিবহন কাউন্টার, থ্রি-হুইলার স্ট্যান্ড নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া উচিত। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাসড়কে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশ। চলতি মাসের ২২ দিনেই মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহনে সড়ক পরিবহন আইনে ৩০০টি মামলা করেছেন তারা। এর মধ্যে ২০০টি মামলা হয়েছে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে।

সোনালীনিউজ/আইএ

Link copied!