ফাইল ছবি
বগুড়া: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বগুড়ায় প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জেলার সাতটি আসনের মধ্যে পাঁচটি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ফোন করে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার রাত ও বুধবার সন্ধ্যায় তারেক রহমান টেলিফোনে বগুড়ার পাঁচটি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেন।
সবুজ সংকেত পাওয়া প্রার্থীরা হলেন-বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি–সোনাতলা) আসনে সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলাম, বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও শিবগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মীর শাহে আলম, বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল মুহিত তালুকদার, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে সাবেক এমপি মোশাররফ হোসেন এবং বগুড়া-৫ (শেরপুর–ধুনট) আসনে সাবেক এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ।
বগুড়া-৬ (সদর) ও বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসন দুটি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। স্থানীয় নেতারা মনে করেন, এবার বগুড়া-৬ আসনে খালেদা জিয়া এবং বগুড়া-৭ আসনে তারেক রহমান নিজেই প্রার্থী হতে পারেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই বগুড়ার সাতটি আসনে রাজনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে। বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, নাগরিক ঐক্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন। প্রতিটি আসনে উঠান বৈঠক, কর্মী সভা ও ভোটকেন্দ্রভিত্তিক সংগঠন গঠনের কাজ চলছে জোরেশোরে।
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সাতটি আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে নিয়মিত জনসভা ও প্রচার চালাচ্ছেন। আগে ধারণা করা হচ্ছিল, মান্না বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে ওই আসনে প্রার্থী হবেন। কিন্তু বিএনপি সেখানে নিজস্ব প্রার্থী মীর শাহে আলমকে সবুজ সংকেত দিয়েছে।
সবুজ সংকেত পাওয়া প্রার্থীরা জানান, তারেক রহমান ফোনে তাঁদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘ঐক্যবদ্ধ থাকুন, জনগণের কাছে যান, ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করুন।’
তারেক রহমানের এ নির্দেশনায় বগুড়ার বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তবে যাঁরা মনোনয়নের আশা করছিলেন কিন্তু সংকেত পাননি, তাঁরা আপাতত নীরব। তাঁদের কেউ কেউ বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে মাঠে আছি, জনগণের পাশে আছি। দল যাকে প্রার্থী করবে, তার পক্ষেই কাজ করব।”
এদিকে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা বগুড়ার সাতটি আসনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে নাগরিক ঐক্য এখনো বগুড়া-২ আসনে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে মাহমুদুর রহমান মান্নাকেই প্রচারে রেখেছে।
সবশেষ খবর অনুযায়ী, বগুড়ার রাজনীতিতে এখন নির্বাচনি আমেজ স্পষ্ট। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত পোস্টার, ব্যানার ও কর্মীসভা বাড়ছে প্রতিদিন। দলের অভ্যন্তরে প্রার্থীতা নিয়ে হিসাব-নিকাশ চললেও নির্বাচনের উত্তাপ এখন পুরো জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :