ছবি : প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গা: চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যার ঘটনার দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাস পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে উত্তোলন করা হলো জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের গাফফার আলী আকাশের লাশ।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আজম ও পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর মনিরুজ্জামানের উপস্থিততে লাশ উত্তোলন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২১ মে বিকালে অফিস শেষে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে খুলনাগামী ডাউন ৭১৬ কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের ঙ কোচে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী সেনেরহুদা গ্রামের গাফফার আলী ওরফে আকাশ। দর্শনা হল্ট স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে সড়ক পথে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু জয়রামপুর রেলস্টেশনের অদূরে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
রেললাইনের পাশে রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা তার পকেটে থাকা ছবি ও এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন। প্রথমে সবাই ধারণা করেছিল আকাশ হয়তো ট্রেন থেকে অসাবধানতাবশত নিচে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় ওই রাতেই তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে রেলওয়ে পুলিশ। পরের দিন সকালে জানাজা শেষে তাকে সেনেরহুদা জান্নাতুল খাদরা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
কিন্তু পরবর্তীতে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক ঘটনা। ট্রেনে থাকা বেশ কয়েকজন যাত্রীর মারফতে জানা যায়, অসাবধানতাবশত নয়, তাকে ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। একথা শোনার পর নিহতের পিতা জিন্নাত আলী বাদী হয়ে গত ২৬ মে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায়, ওইদিন ডাউন কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনে দায়িত্বরত জুনিয়র টিটিই লালন চক্রবর্তী (৪২), জিআরপির এসআই পারভেজ (৩৬), কনস্টেবল কাদের (৪০) এবং অ্যাটেন্টডেন্ট মিলন (৩৭) ও সোহাগ মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়। ট্রেনে বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন এবং টাকা না দিতে চাইলে তাদের সাথে খারাপ আচরণের প্রতিবাদ করার কারণে সৃষ্ট বাগবিতণ্ডার জেরে উল্লিখিত আসামিসহ আরও ৪-৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি মিলে আকাশকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে বলে মামলায় উল্লেখ করেন বাদী জিন্নাত আলী।
পিএস
আপনার মতামত লিখুন :