জলবায়ু সংকটে বীজের লড়াই, শ্যামনগরে নেপালের প্রতিনিধি দল

  • সাতক্ষীরা প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫, ০৫:১৮ পিএম
জলবায়ু সংকটে বীজের লড়াই, শ্যামনগরে নেপালের প্রতিনিধি দল

ছবি: প্রতিনিধি

জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় জাতবৈচিত্র্য ও বীজ সংরক্ষণ বিষয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক ব্যতিক্রমী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নেন নেপালের পারমাকালচারের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

রোববার ১৪ ডিসেম্বর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট এগ্রোইকোলজি লার্নিং সেন্টারে শাপলা নারী উন্নয়ন সংগঠনের আয়োজনে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা জাতীয় কৃষিপদকপ্রাপ্ত কৃষাণী অল্পনা রানীর গবেষণাধীন ধানের প্লট পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি স্থানীয় ১৬৪ জাতের ধান, ২৪ প্রকার শিম, ১২ প্রকার ঝাল, ১০ প্রকার ডাঁটাশাক, ৫ প্রকার লাউ, ২৬ প্রকার অচাষকৃত শাকসবজি, ৫ প্রকার বেগুনসহ ঝিঙা, তরুল, পুঁইশাক, উচ্ছে, পেঁপে মিলিয়ে প্রায় ৪০০ প্রকার স্থানীয় বীজ ঘুরে দেখেন তাঁরা। এ সময় হাতে–কলমে বীজ সংরক্ষণের কৌশল সম্পর্কেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

প্রশিক্ষণ চলাকালে নেপালের পারমাকালচার প্রতিনিধি দলের সদস্য দিল মায়া গুরুং বলেন, তিনি ৩০ বছর ধরে নেপালের পাহাড়ি এলাকায় পিছিয়ে পড়া নারী ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে টিকে থাকার কৌশল নিয়ে কাজ করছেন। তাঁর মতে, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও নেপালের পাহাড়ি এলাকার পরিবেশ ভিন্ন হলেও জলবায়ু সংকটের প্রভাব উভয় জায়গাতেই গভীর।

এ সময় তিনি একটি নেপালি সংগীতের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঋতুচক্র ও স্থানীয় বীজ বৈচিত্র্যের বিলুপ্তি, ক্ষতিকর কীটনাশকের প্রভাব এবং প্রকৃতির সঙ্গে কৃষকের নিবিড় সম্পর্ক তুলে ধরেন।

স্থানীয় সূর্যমুখী নারী উন্নয়ন সংগঠনের সভানেত্রী মিতা রানী বলেন, ধুমঘাট এগ্রোইকোলজি লার্নিং সেন্টার থেকে তাঁরা বিষমুক্ত নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, বীজ সংরক্ষণ, প্রাণিসম্পদ পালন, প্লাস্টিকের পুনঃব্যবহার, ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি এবং অচাষকৃত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ সম্পর্কে শিখছেন। এসব জ্ঞান কাজে লাগিয়ে বাড়ির বসতভিটা সর্বোচ্চ ব্যবহার করে জাতবৈচিত্র্য রক্ষার চেষ্টা করছেন তাঁরা।

শাপলা নারী উন্নয়ন সংগঠনের সভানেত্রী অল্পনা রানী মিস্ত্রির সভাপতিত্বে এবং বরষা গাইনের সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের শিক্ষা, সংস্কৃতি, বৈচিত্র্য ও নগর বিভাগের সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার, কর্মসূচি কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মণ্ডল, মারুফ হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা।

এসএইচ 

Link copied!