পঞ্চগড়ে মঠের পুরোহিত হত্যাকাণ্ডে মামলা দায়ের: আট

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬, ০৮:৩৩ এএম
পঞ্চগড়ে মঠের পুরোহিত হত্যাকাণ্ডে মামলা দায়ের: আট

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে শ্রী শ্রী সন্ত গৌড়ীয় মঠের অধ্যক্ষ জগেশ্বর চন্দ্র রায় ওরফে জগেশ্বর দাসাধিকারী (সন্ন্যাস গ্রহণের পর নাম পরিবর্তন) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেবীগঞ্জ থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার রাতে দুটি মামলাটি দায়ের করা হয়। এছাড়া, এ ঘটনায় দুই সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে।  দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আয়ুব আলী এ তথ্য জানান।

পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে খলিলুর রহমান (৪৫) ও বাবুল (৪০) নামে দুই সন্দেহভাজনকে আটক করেছে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ। তাদের বাড়ি দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের দেবীডুবা গ্রামে।

দেবীগঞ্জ থানার ওসি জানান, অধ্যক্ষের বড়ভাই রবীন্দ্র চন্দ্র রায় বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ বাদী হয়ে একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করে।

দেবীগঞ্জ থানার ওসি বলেন, রাতেই অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে দেবীডুবা গ্রাম থেকে খলিলুর রহমানকে আটক করা হয়েছে।তাকে জেএমবি সদস্য বলে ধারণা করছে পুলিশ।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরের করতোয়া নদীর পশ্চিম পাশে অবস্থিত শ্রী শ্রী সন্ত গৌড়ীয় মঠ। সকালে ওই মঠের পুরোহিতসহ তিন সাধু পুজো অর্চনা করছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করলে পুরোহিত যগেশ্বর রায়সহ অন্যরা মঠ থেকে বেরিয়ে আসেন। দুবৃত্তদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র দেখে অধ্যক্ষ মঠ থেকে বের হয়ে ঘরের দিকে দৌড় দেন। কিন্তু ঘরে পৌঁছানোর আগেই বারান্দায় চাপাতি দিয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় মঠোর আরেক পুরোহিত গোপাল চন্দ্র পালানোর চেষ্টা করলে তাকে গুলি করা হয়। এছাড়া আরেক পুরোহিতের ওপর ককটেল হামলা চালান তারা। এ সময় মঠের বাইরে কাজ করার সময় সাধুদের সাহায্য করতে এগিয়ে এলে নিতাই পদ দাশ নামে এক ব্যক্তির ওপরও ককটেল নিক্ষেপ করেন দুর্বৃত্তরা। আহত নিতাই ও গোপালের মাকে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি রয়েছে।

মঠের পুজারী রাধামাধব দাসসহ ওই এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি ঘটনার সময় দুজন যুবককে মঠ থেকে বেরিয়ে যেতে দেখেন। তাদের দেখে দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান।

অধ্যক্ষের ভাই রবীন্দ্র রায় ও স্থানীয় সাধুরা জানান, অধ্যক্ষ যগেশ্বর দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নের সোনাহার গ্রামের জমিজমা বিক্রি করে চলে আসেন দেবীগঞ্জ করতোয়া ব্রিজের পশ্চিম পাড়ে সোনাপোতা এলাকায়। এখানে এসে তিনি ১৯৯৮ সালে মঠটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এ মঠের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। তিনি ব্রম্মচারী (বিয়ে করেননি) ছিলেন। তিন ভাই ও দুই বোন তার। তারা সকলেই গ্রামের বাড়ি সোনাহারে থাকেন। এই মঠে ধর্মসভা, ধর্ম নিয়ে আলোচনা আর পূর্জা অর্চনা করা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধুরা এখানে এসে আলোচনায় যোগ দেন। দুয়েকদিন থেকে আবার চলে যান

সোনালীনিউজ/এমএইউ

Link copied!