জামিন পাচ্ছেন বিনা বিচারে ১৬ বছর বন্দী থাকা শিপন

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০১৬, ০৮:৪৯ পিএম
জামিন পাচ্ছেন বিনা বিচারে ১৬ বছর বন্দী থাকা শিপন

ঢাকা: ১৬ বছর ধরে বিনা বিচারে কারাবন্দী এক ব্যক্তিকে জামিনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একটি পুরনো সংঘর্ষ ও হত্যা মামলায় গত ২০০০ সাল থেকে ১৬ বছর ধরে বিনা বিচারে কারাবন্দী ছিলেন মোহাম্মদ শিপন নামের এ ব্যক্তি।

আগামী ৬০ কর্ম দিবসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করবারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে মো. শিপনের পক্ষে হাইকোর্টে আবেদনকারী আইনজীবী কুমার দেবুল দে বলেন, এই সময়ে তার সঙ্গে তার কোন আত্মীয় স্বজনের যোগাযোগ হয়নি, তার কোনও উকিলও ছিল না, তার কথাবার্তা অসংলগ্ন।

কুমার দেবুল দে আরো বলেন, এখন তার বয়স আনুমানিক চল্লিশের বেশী। তার বাম হাতটা কব্জি থেকে কাটা। যে মামলায় জেরে বন্দি রয়েছেন মোহাম্মদ শিপন, সেই ঘটনার সময়ই তিনি বাঁ হাতের সবগুলো আঙুলসহ পুরো তালুটা হারিয়েছেন বলে মি. দে’র ধারণা। মস্তিষ্ক বিকৃতি দেখা দেয়ায় এ ব্যাপারেও অসংলগ্ন বক্তব্য এসেছে বন্দী শিপনের কাছ থেকে।

ঘটনার শুরু ১৯৯৪ সালে। ওই সময় ঢাকার পুরনো অংশে সূত্রাপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একটি সংঘর্ষ হয় এবং তাতে একজন নিহত হয়। এ নিয়ে যে মামলাটি হয়, তাতে ২০০০ সালে গ্রেপ্তার হন মি. শিপন। মামলাটির বিচার আজো শেষ হয়নি। এ নিয়ে গত ২৬ শে অক্টোবর ঢাকার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে একটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রচারিত হয়। সেই রিপোর্টটি দেখেই আইনজীবী মি. দে ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন এবং মোহাম্মদ শিপনের পক্ষে আইনি লড়াই চালানোর সিদ্ধান্ত নেন।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এতদিন কিভাবে এই ব্যক্তিটির আত্মীয়রা তার খোঁজ নিল না? এর উত্তর অবশ্য মেলেনি।

তবে মি. দে’র কাছে এটুকু জানা যাচ্ছে, এই ঘটনাটি সম্প্রতি গণমাধ্যমে নানাভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর সূত্রাপুর থেকে অনেক মানুষই তাকে ফোন করে বলেছেন যে তারা ভেবেছিলেন শিপন আর বেঁচে নেই।

এদিকে, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদক মাসুদুর রহমান বলেন, তার করা প্রতিবেদনটি প্রচারিত হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া থেকে এক প্রবাসী বাংলাদেশী তাকে টেলিফোন করে বলেছিলেন যে ১৯৯৪ সালের সূত্রাপুরের ওই সংঘর্ষের পরবর্তী সময়ে মোহাম্মদ শিপনকে তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে ‘ট্রাফিক কন্ট্রোল’ করতে দেখেছেন।

অর্থাৎ, তখন থেকেই শিপনের মস্তিষ্ক বিকৃতি ছিল। সে ছিল ভাসমান একজন মানুষ। তার কোন আত্মীয়-স্বজনকে কেউ চিনত না, বলছিলেন মি. রহমান। এখন শিপনের যে অবস্থা, তাতে সে জামিনে মুক্তি পেলেও জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে খোদ হাইকোর্টেরই সংশয় আছে।

হাইকোর্ট তাই আরো নির্দেশ দিয়েছেন, প্রয়োজনে সরকারই যেন তার পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেয়। আর তাকে আইনি সহায়তা দেবার জন্যও ঢাকা লিগ্যাল এইড অফিসকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খবর-বিবিসি।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Link copied!