খালেদার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা স্থগিতের আবেদন 

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০১৭, ০১:০৫ পিএম
খালেদার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা স্থগিতের আবেদন 

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে “বিতর্ক” বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এটি মঙ্গলবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে শুনানীর জন্য রাখা হয়েছে। গতকাল এ আবেদনটি করেন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

শহীদদের সংখ্যা নিয়ে “বিতর্কের অভিযোগ এনে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। আদালত মামলা আমলে নিয়ে খালেদা জিয়াকে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছেন।

মামলায় দণ্ডবিধির ১২৪ (ক) ধারার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের পাশাপাশি ১২৩ (ক) ধারায় বাংলাদেশ সৃষ্টির নিন্দা ও তার সার্বভৌমত্ব বিলোপে সমর্থন করার এবং ৫০৫ ধারায় জনগণের অনিষ্ট সাধন সহায়ক বিবৃতি দেয়ার অভিযোগও করা হয়েছে। আদালত তিনটি ধারায়ই অভিযোগ আমলে নিয়ে সমন জারির ওই আদেশ দিয়েছেন।

মামলার তিনটি ধারার মধ্যে ১২৪ (ক) ধারায় সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড ও সর্বনিম্ন তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা শুধু যে কোনো পরিমাণ অর্থদণ্ড, দণ্ডবিধির ১২৩ (ক) ধারায় সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের সশ্রম কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ড এবং দণ্ডবিধির ৫০৫ ধারায় সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

বাদী আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বলেন, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিশন বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় আসামি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, “তিনি তো (বঙ্গবন্ধু) বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি, তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ‘বলা হয়, এতো (৩০ লাখ) শহীদ হয়েছে, এটা নিয়েও তো অনেক বিতর্ক আছে।” এই বক্তব্য পরদিন দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সবিস্তারে প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, এই বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ার পর গত ২৩ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।

লিগ্যাল নোটিশে খালেদা জিয়াকে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হলেও তিনি কর্ণপাত না করায় গত ১৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। আবেদন অনুযায়ী গত ২১ জানুয়ারি মামলার অনুমতি প্রদান করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বাদী আরো বলেন, খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল ঘোষণাপত্রের শুধু পরিপন্থীই নয়, দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে বর্তমান সরকারের প্রতি ঘৃণার সঞ্চার করেছেন। যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। যা দণ্ডবিধির ১২৩ (ক), ১২৪ (ক) এবং ৫০৫ ধারার অপরাধ। তাই অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে প্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হোক।

এদিকে মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ হওয়ার পর বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত ভবনের সামনে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

একই অভিযোগে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর দণ্ডবিধির ১২৩ (ক) ধারায় বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি এডভোকেট মশিউর মালেক একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় সরকারের অনুমতি গ্রহণ করে শাহবাগ থানাকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল। এছাড়া একই অভিযোগে নড়াইলের বিচারিক হাকিমের আদালতে একটি মানহানির মামলা করা হয়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Link copied!