ঢাকা: ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সূচনা বক্তব্য ও প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
রোববার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর অনুমতি সাপেক্ষে এ বিচার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার শুরু হয়।
এই মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি। মামুন ইতোমধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ হিসেবে সাক্ষ্য দিতে সম্মত হয়েছেন।
পাঁচটি অভিযোগ:
শেখ হাসিনা ও অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যায়িত করেন। এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্র সরকারপন্থী গোষ্ঠী দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করে এবং প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে আহত করে।
দ্বিতীয় অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। অডিও রেকর্ডের মাধ্যমে এই নির্দেশনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই নির্দেশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সরাসরি জড়িত ছিলেন।
তৃতীয় অভিযোগ রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় হাসিনা, আসাদুজ্জামান ও মামুনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
চতুর্থ অভিযোগ রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীর গুলিতে মৃত্যুর ঘটনায়ও একই তিনজনকে দায়ী করা হয়েছে।
পঞ্চম অভিযোগ আশুলিয়ায় ছয় নিরীহ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাতেও তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
এটি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চতুর্থ মামলা। এর মধ্যে একটি আদালত অবমাননার মামলায় তাঁকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর এটিই তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম দণ্ডপ্রাপ্ত মামলা।
বর্তমানে মানবতাবিরোধী অপরাধের আরও দুটি মামলায় তদন্ত চলছে। একটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ২৪ আগস্ট, অপরটির ১২ আগস্ট।
ওএফ
আপনার মতামত লিখুন :