মৃত্যুর আগে ১৪ জনকে ফোন করেছিলেন হুমাইরা, মেলেনি সাড়া

  • বিনোদন ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ১২:০১ পিএম
মৃত্যুর আগে ১৪ জনকে ফোন করেছিলেন হুমাইরা, মেলেনি সাড়া

ঢাকা: পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের মৃত্যুতে তৈরি হচ্ছে একের পর চাঞ্চল্য। গত ৯ জুলাই করাচির একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার করা হয় তার পচনধরা মরদেহ। 

পুলিশ জানিয়েছে, ৩২ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে ৬ মাস আগেই; এর আগে সকলের সঙ্গে কমিয়ে দেন যোগাযোগও। এই রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রীর বাবা-মা। তাদের অভিযোগ, মেয়েকে কেউ হত্যা করেছেন!

এদিকে পুলিশ জানায়, গত বছরের ৭ অক্টোবর অন্তত ১৪ জনকে ফোন করার চেষ্টা করেছিলেন হুমাইরা, যাদের একজন জনপ্রিয় পরিচালকও—বর্তমানে যিনি ইসলামাবাদে অবস্থান করছেন। কিন্তু কেউই তার ফোন রিসিভ করেননি। 

হুমাইরার ফোন, ডায়েরি ও একটি ক্ষতিগ্রস্ত ট্যাবলেট বর্তমানে প্রমাণ হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তার মোবাইলে মোট ২ হাজারের বেশি কন্টাক্ট ছিল, কিন্তু শেষ সময়ে কেউ তার পাশে ছিল না। একাধিক ব্যক্তির কাছে চাকরিও চেয়েছেন হুমায়রা।


 
তবে অভিনেত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য জানান দিচ্ছে অন্যকিছু। জানা গেছে, হুমাইরার অ্যাকাউন্টে ৪ লাখ রুপি ছিল এবং তার সাম্প্রতিক লেনদেনের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, হুমাইরা কোনো ধরনের আর্থিক সংকটে ছিলেন না।

এর আগে অভিনেত্রী হুমাইরার মরদেহ উদ্ধারের পর খবর ছড়ায়, মৃত্যুর কয়েকদিন আগে তিনি আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন, এমনকি বাসা ভাড়া দিতেও হিমশিম খাচ্ছিলেন। তবে বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে জানান তার পরিবার। তবে এক তদন্ত কর্মকর্তা জানান, হুমাইরা আর্থিকভাবে সচ্ছল থাকলেও হয়তো মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।

হুমাইরার মরদেহ ঘরের যে কক্ষে পাওয়া যায়, সেটি একটি পেইন্টিং স্টুডিও ছিল এবং পাশের বাথরুমে যাতায়াতের পথ হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। সেখানে কাপড় ধোয়ার কাজে ব্যবহৃত একটি টবও পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, হুমায়রা কাপড় ধোয়ার সময় হয়তো পিছলে পড়ে গিয়েছিলেন। তবে আশপাশে কোনো রক্তের দাগ ছিল না, শরীরে কোনো হাড় ভাঙার চিহ্নও পাওয়া যায়নি এবং শারীরিক নির্যাতনের কোনো আলামতও মেলেনি। তবে এসব তথ্যে খুনের প্রমাণ না মিললেও পুলিশ এখনই কোনো সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না। 

অন্যদিকে পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা মোবাইল ফোন, ট্যাবলেটসহ ডিজিটাল ডিভাইসগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে বড় প্রশ্ন থেকে যায়—তার মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হলেও এতদিন তা কেউ জানালো না কেন! নিচতলার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত নভেম্বরেই তারা গন্ধ টের পেয়েছিলেন। কিন্তু ভবনের দারোয়ান বিষয়টি আমলে নেননি।

এদিকে হুমাইরার ভাই নাভিদ আসগর এই মৃত্যুকে দুর্ঘটনা মানতে নারাজ। তিনি বলেছেন, আমার বোন দুর্ঘটনায় মারা যায়নি, বরং তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ আমাকে জানিয়েছে, দরজা ভাঙার পর দেখা যায় পেছনের দরজা ও ছাদের জানালাও খোলা ছিল। সম্ভবত এ কারণেই দুর্গন্ধ তীব্রভাবে ছড়ায়নি। আমরা ৯০ শতাংশ নিশ্চিত, এটি হত্যাকাণ্ড।

ইউআর

Link copied!