অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল না রাজ্জাকের

  • বিনোদন প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০১৭, ০৮:১৮ পিএম
অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল না রাজ্জাকের

ঢাকা: ১৯৬৮ সালে জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সিনেমা জগতে পূর্ণাঙ্গ অভিষেক ঘটে শক্তিমান অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের। এ পর্যন্ত ৬শ’র বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

নায়ক রাজের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকতার টালিগঞ্জে। তার প্রকৃত নাম আব্দুর রাজ্জাক। টালিগঞ্জের মোল্লা বাড়ির আকবর হোসেন ও মা মিনারুন্নেসার ছোট ছেলে তিনি। জন্মের পর কলকাতায় বেড়ে ওঠা রাজ্জাকের। কখনই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিলো না তার; বরং তার ইচ্ছে ছিলো খেলোয়াড় হওয়ার।

কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় মঞ্চ নাটকে কেন্দ্রীয় চরিত্রের জন্য তার স্পোর্টস শিক্ষক তাকে বেছে নেন। অনেকটা অনিচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষকের কথায় তিনি অভিনয় করেন। কিন্তু আশ্চর্য্জনকভাবে তার অভিনয় দেখে সবাই মুগ্ধ হন। এ থেকেই তিনি অভিনয়ের আনন্দ পেতে শুরু করেন।

শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা নাটক ‘বিদ্রোহীতে’ গ্রামের কিশোর চরিত্রের মধ্য দিয়ে অভিনয়ে যুক্ত হন। কিন্তু অভিনয়ের কাজ করার ইচ্ছে থাকলেও প্রধান বাধা ছিলো তার পরিবার। পরিবারের কেউ চাননি তিনি অভিনয় করেন।

তিন ভাইয়ের মধ্যে রাজ্জাক ছিলেন সবার ছোট। বড় দুই ভাই ব্যবসা করছেন তাই তাকেও সেটি অনুসরণ করতে হবে এটি তিনি মেনে নিতে পারেননি তিনি। পরে মেজ ভাইয়ের সাহায্যে অভিনয় জগতে আসার সমস্ত সহযোগিতা পান রাজ্জাক।

এসএসসি পাশ করার পর রাজ্জাক কিছু অভিনেতার সঙ্গে অভিনয় করা শুরু করেন। নিজের প্রতিভার গুণে ধীরে ধীরে ছোট পর্দার নাটকে অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে যান তিনি। ওই সময়েই রাজ্জাক কলকাতার নামকরা নাট্যভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। অভিনয়ের অধ্যায় শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের আরেকটি অধ্যায় শুরু করেন তিনি।

১৯৬২ সালে লক্ষ্মীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন রাজ্জাক। সেসময় কলকাতায় অভিনয় করতে গিয়ে তার স্পর্শে আসেন খ্যাতিমান অভিনেতা উত্তম কুমার, তপন সিনহা এবং পরিচালক পীযূষ সাহা। পীযূষ সাহার কথাতেই ঢাকায় পাড়ি জমান নায়ক রাজ রাজ্জাক।

১৯৬৪ সালে রাজ্জাক কলকাতা থেকে স্ত্রী লক্ষ্মী ও ছয় মাসের ছেলে বাপ্পারাজকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। চোখে তখন অনেক স্বপ্ন। অভিনয় দিয়ে নিজের সর্বোচ্চ অভিনয় করার। কলকাতা থেকে ঢাকায় এসে প্রথমে তিনি থিয়েটারে কাজ শুরু করেন।

থিয়েটারে কাজ করতে করতে তিনি সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর দু’বছর টেলিভিশন অভিনেতা হিসেবে কাজ করেন। ছোট পর্দায় ‘ঘরোয়া’ নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের নজরে চলে আসেন রাজ রাজ্জাক।

অবশেষে রাজ্জাকের স্বপ্ন পূরণ হয় ১৯৬৮ সালে। জহির রায়হানের চলচ্চিত্র ‘বেহুলা’ প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। এরপর তাকে আর ফিরে তাকে হয়নি। দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘আনোয়ারা’ আর তৃতীয় ‘আগুন নিয়ে খেলা’। এই ছবি বের হওয়ার আগেই তিনি সুপারস্টার খেতাবে ভূষিত হন তিনি।

সোনালী নিউজ/ঢাকা/জেএ

Link copied!