ঢাকা : ভুয়া নিউজপোর্টাল তৈরি করে সেখানে সামাজিক-রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা তৈরি এবং আওয়ামী নেতাদের চরিত্র হরণের চেষ্টা করছে একটি গোষ্ঠী। এসব ভুঁইফোঁড় অনলাইনের বিষয়ে নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
দলটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে। দলের ওই পেজে দাবি করা হয়েছে, বিএনপি-জামাতের প্রোপাগান্ডা সেল তৈরি করে এসব ভুয়া অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে সামাজিক-রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে।
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, অক্টোবর ২০১৬-তে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার নাসিরনগরে আর ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুতে অনলাইনে মিথ্যা প্রোপ্যাগান্ডার মাধ্যমে আক্রমন চালানো হয় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর। এই দুটি সহ অনলাইনে উস্কানির মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় হামলার নেপথ্যে ছিল দেশবিরোধীদের প্রোপাগান্ডা।
মূলত জামায়াত ইসলাম তার যুদ্ধাপরাধী নেতাদের বাঁচাতে ২০১২ সাল থেকে এই প্রোপাগান্ডা সেলগুলো সক্রিয় করে অনলাইনে। সাথে যোগ হয় দেশ বিদেশে থাকা বিএনপির অনলাইন কর্মীরা। বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে চলছে এ ধরণের অপপ্রচার।
আওয়ামী লীগের ফেসবুক ফ্যানপেজের ওই পোস্টে আরো বলা হয়েছে, অপপ্রচারের অংশ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম ব্যবহার করে বিব্রতকর সব উদ্বৃতি প্রদান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবারের সদস্যদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া ফেইসবুক আইডি ও পেইজ খুলে ভুল তথ্য প্রদান, ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রী ও নেতাকর্মীদের চরিত্র হননের মিথ্যা খবর ধারাবাহিকভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এই প্রোপাগান্ডা সেল। এছাড়াও ভুল তথ্য উপস্থাপন করে বিভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে দলটির তৃণমূল পর্যায়ে। উল্লেখ্য তাদের এইসব মিথ্যা খবর জায়গা পায় না মুলধারার কোন পত্রিকা ও নিউজ পোর্টালে।
এতে আরও বলা হয়, এই প্রোপাগান্ডা সেলের অংশ হিসেবে দৃঢ়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিএনপি-জামাতের বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ। যাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, অন্য দিগন্ত, analysisbd, newsorgan24 , দেশ ভাবনা, শীর্ষ নিউজ , সংলাপ, বিডি টুডে ডট নেট , লন্ডন বিডি নিউজ , nnbd24, rbn24, দৈনিক সংগ্রাম, Tazakhobor ), বিডি মর্নিং, প্রথম বাংলাদেশসহ আরো বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল।এই ধরণের পোর্টালগুলো একত্রে যে কোন সময় দেশে একটি দাঙ্গা লাগিয়ে দিতে সক্ষম।
এসব প্রোপাগান্ডার সবচাইতে উত্তম উদাহরণ ২০১২ সালে রামুর ঘটনাটি। পরবর্তীতে তদন্ত করে জানা যায়, এই হামলার পেছনে মূল ইন্ধনদাতা ছিলেন স্থানীয় এক শিবির নেতা, যার নাম মোক্তাদির। একইভাবে নাসিরনগর হামলার জন্য দায়ী ছিল এই স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের প্রোপাগান্ডা। এমপি লিটন হত্যা এবং হত্যা পরবর্তী সেই দায় আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর চাপানোর জন্য নিয়মিত কাজ করে গেছে এই প্রোপাগান্ডা সেলগুলো।
ওই পোস্টে আরো বলা হয়, শাহবাগ আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আন্দোলনকে ভুল পথে নিয়ে যেতে উস্কানিমুলক বিকৃত ছবি প্রকাশ, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নামে ভুয়া একাউণ্ট খুলে ধর্মীয় বিদ্বেষমুলক পোস্ট দিয়ে কক্সবাজারের রামু ও ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নাসিরনগরে হামলা, সাতক্ষীরায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে মাইকে ঘোষণা দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
এছাড়াও কাবা শরীফের গিলাফ পরিবর্তনের ছবিকে সাইদীর বিচারের বিরুদ্ধে সৌদি আলেমদের বিক্ষোভ বলে অপপ্রচার, ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বর ঘেরাও কর্মসূচির পরে কয়েক হাজার মানুষকে হত্যার মিথ্যা সংবাদ, মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে থাইল্যাণ্ড ও তিব্বতের বিভিন্ন দুর্ঘটনার ছবি দিয়ে অপপ্রচার ইত্যাদির মাধ্যমেও দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা চলে এই সকল ভুয়া নিউজসাইট থেকে।
আওয়ামী লীগের ফেসবুক ফ্যানপেইজে বলা হয়, এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এখানে জনগণকেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে। এ ধরনের কোন ভুয়া নিউজ পোর্টালের মিথ্যা খবর শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যদেরকেও এই ব্যাপারে সতর্ক করতে সাহায্য করতে হবে। এই ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড রুখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদেরকে সহায়তা করতে হবে একজন দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে।
সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :