কুয়ায় ৯ জনের লাশ, অবশেষে খুললো রহস্যের জট

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২০, ০৫:৩৮ পিএম
কুয়ায় ৯ জনের লাশ, অবশেষে খুললো রহস্যের জট

ঢাকা : ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে গত সপ্তাহে কুয়ায় এক পরিবারের ছয় জনসহ নয়জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্যের জট খুলেছে। পুলিশ দাবি করেছে, এক নারীকে খুনের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় আরও নয়জনকে কুয়ায় ফেলে হত্যা করা হয়।

ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার সন্দেহভাজন সঞ্জয় কুমার যাদব (২৪) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, সঞ্জয়ের সঙ্গে রফিকা নামে ৩৭ বছর বয়সী এক নারীর সম্পর্ককে ঘিরে এই ঘটনা ঘটে।

রফিকা নিজেও খুন হয়েছেন। এই খুনের ঘটনা চাপা দিতেই এক পরিবারের ছয় জনকে হত্যা করে সঞ্জয়। নিহত আরও তিনজন ঘটনার শিকার হন।

গত সপ্তাহে তেলেঙ্গানার ওয়ারাঙ্গাল জেলার গিসুগোন্ডা মণ্ডল এলাকার গোরেরকুন্টা গ্রামের একটি কুয়া থেকে নয়টি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে এক পরিবারের ছয়জন ছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে তেলেঙ্গানায় যাওয়া বাঙালি এই পরিবারটি সেখানেই বসবাস করছিলেন। অপর তিনজনের মধ্যে দুই জন বিহার থেকে ও অপরজন ত্রিপুরা থেকে তেলেঙ্গানায় এসেছিলেন।

ছয় বছর আগে কাজের খোঁজে সঞ্জয় বিহার থেকে ওয়ারাঙ্গালে এসেছিলেন। এখানে গোরকুন্টার জুট মিলে কাজ নেন তিনি। এখান থেকেই মকসুদের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় তার।  মকসুদের স্ত্রী নিশা আলমের বোনের মেয়ে রফিকা।  তিন সন্তানে জননী স্বামী পরিত্যক্তা রফিকার সঙ্গে সম্পর্ক হয় সঞ্জয়ের। কয়েক বছর ধরে বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়াই তারা অন্য একটি এলাকায় একত্রে বসবাস করছিলেন।

পরে বিয়ের জন্য রফিকা সঞ্জয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করলে সে তাকে খুনের পর লাশ গুম করে। রফিকা কোথায় জানতে চেয়ে সঞ্জয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে নিশা ও রফিকার নিখোঁজের বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ করার ভয় দেখায়। এতেই মকসুদের পুরো পরিবারকে খুনের পরিকল্পনা করে সঞ্জয়।

পরে মকসুদের পরিবারের এক সদস্যের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে সেখানে যায় সঞ্জয়।  পূর্ব পরিকল্পনা মতো খাবারে ঘুমের ওষুধ মেশায়। ওষুধের প্রভাবে ওই পরিবারের ছয় সদস্য ও তিন অতিথির সবাই অচেতন হয়ে পড়লে একে একে নয়জনকে কুয়ায় ফেলে দেয়। সেখানে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় সবার।

লাশ উদ্ধারের পর প্রথমে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া না গেলেও পরে কয়েকটি লাশে আঁচড়ের দাগ দেখে ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড বলে সন্দেহ করে পুলিশ। এরপর তদন্তে নেমে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করে।  

ওয়ারাঙ্গালের পুলিশ কমিশনার ভি রাভিন্দর সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক খুন ঢাকতে সে আরও নয় খুন করে।’

সঞ্জয় খুনের কথা স্বীকার করেছে জানিয়ে পুলিশ তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

সোনালীনিউজ/এএস

Link copied!