সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে রাশিয়া সফরে এরদোয়ান

  •  আন্তর্জাতিক ডেস্ক   | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০১৬, ১১:৫০ এএম
সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে রাশিয়া সফরে এরদোয়ান

রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান এবং ভ্লাদিমির পুতিনদুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। সোমবার রাশিয়া সফরে যাওয়ার আগ মুহূর্তে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। এ সময় তিনি বলেন, এটি হবে এক ঐতিহাসিক সফর এবং দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে এক নবদিগন্ত।

পুতিনের সঙ্গে আলোচনা তুকি-রুশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের শুরু করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, দুই দেশের একযোগে অনেক কিছু করার আছে। এ সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিজের ‘বন্ধু’ বলেও উল্লেখ করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। এর আগে বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৯ আগস্ট বৈঠক করবেন দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধান। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যেই এই বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন পুতিন ও এরদোয়ান।

দিমিত্রি আরও বলেন, কিভাবে, কোন পথ ও পদ্ধতি অনুসরণ করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করা হবে সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে এই বৈঠকে। ইতোপূর্বে তুরস্ক ও রাশিয়া সিরিয়া প্রশ্নে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে ছিল। আঙ্কারা প্রায়শই মস্কোর প্রতি আসাদ সরকারকে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে।  যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় দুদেশের সম্পর্কে সৃষ্ট ফাটল জোড়া লাগা শুরু হয় আনুষ্ঠানিকভাবে এরদোয়ান যখন অনুতাপ প্রকাশ করে নিহত বিমানচালকের পরিবারের কাছে ক্ষমা চান।

সম্প্রতি তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার পর এরদোয়ান রাশিয়ার দিকে আরও ঝুঁকে পড়ছেন বলে মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এরদোয়ান মনে করেন ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পেছনে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ নিয়ন্ত্রিত যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিত ইসলামি চিন্তাবিদ ফেতুল্লাহ গুলেন জড়িত। ফলে এরদোয়ান বুঝতে পেরেছেন সিআইএ ও ন্যাটো তার ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র কুর্দি বিদ্রোহীদের একটি অংশকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এটাকে ভালো চোখে দেখছেন এরদোয়ান। ফলে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে তিক্ততার অবসান ঘটিয়ে মৈত্রী পুনরুদ্ধার করতে চান।

২ আগস্ট মঙ্গলবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এরদোয়ান বলেন, তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থানে আমাদের পশ্চিমা বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন ছিল। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তারা চেয়েছিল এই অভ্যুত্থান সফল হোক। কিন্তু তুর্কি জনগণ সেটা হতে দেয়নি।

তিনি বলেন, পশ্চিমারা সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করেছে। তারা অভ্যুত্থানের পক্ষ নিয়েছে। ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পর কোনও বিদেশি নেতা তুরস্ক সফর করেননি। অথচ ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে হামলার পর সংহতি জানাতে বিশ্বনেতারা সেখানে হাজির হয়েছিলেন। যাদের আমরা বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করতাম তারাই অভ্যুত্থানপন্থী সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়েছে। সন্ত্রাসীদের খোঁজে জার্মানিকে আমরা চার হাজারের অধিক ফাইল পাঠিয়েছি। কিন্তু তারা কিছুই করেনি।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, যারা তুরস্কের গণতন্ত্র থেকেও বেশি চিন্তিত অভ্যুত্থানকারীদের ভাগ্য সম্পর্কে, তারা তুরস্কের প্রকৃত বন্ধু নয়। রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, যখন সন্ত্রাসী হামলায় ১০ জন নিহত হচ্ছেন, তখন আপনারা (পশ্চিমা দেশের নেতারা) বিশ্বকে জ্বালিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু যখন তুর্কি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান চেষ্টা হলো, আপনারা অপরাধীদের পক্ষ নিলেন।’ সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Link copied!