কারাগারে শশীকলার দৈনিক মজুরি ৫০ রুপি

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭, ০৭:২১ পিএম
কারাগারে শশীকলার দৈনিক মজুরি ৫০ রুপি

আদালতে যাওয়ার পথে

ঢাকা: শশীকলা ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার ছায়াসঙ্গী। জয়ললিতার মৃত্যুর পর শশীকলা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। তিনিও রাজনীতিতে জনপ্রিয় ছিলেন। ক্ষমতার চেয়ারের পরিবর্তে আশ্রয় হলো কারাগারে। কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর পারাপ্পানা আগ্রাহারা কারাগারে ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম রাত কাটিয়েছেন।

হিসাববহির্ভূত সম্পত্তি রাখার মামলায় চার বছরের সাজা হওয়ায় শশীকলাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তাকে কারাগারের ছোট একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। ব্যবহারের জন্য একটি বালিশ, একটি কম্বল ও একটি চাদর দেওয়া হয়েছে কারগারের পক্ষ থেকে। শশীকলার কক্ষে একটি ফ্যান আছে। 

ভারতীয় রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এ ঘটনায় নজর রাখছে বিশ্ব মিডিয়া। নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করছে তারা। মুখ্যমন্ত্রী হতে যাওয়া এক নারী রাজনীতিবিদকে যেতে হলো কারাগারে। এতোদিনের রাজনৈতিক অর্জন শেষ হতে চলেছে।

আন্তর্জাতিক কয়েকটি গণমাধ্যমকে কারা সূত্র জানায়, শশীকলাকে অপর দুই নারী বন্দীর সঙ্গে কক্ষ ভাগাভাগি করতে হবে। মেঝেতেই ঘুমাতে হবে তাকে। তিনি প্রতিদিন দুটি করে সংবাদপত্র পাবেন। 

কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাজা ভোগকালে কারাগারে বসে মোমবাতি বা আগরবাতি বানাবেন শশীকলা। মজুরি হিসেবে দৈনিক ৫০ রুপি পাবেন তিনি। কারাগারে কোনো ডে অফ বা ছুটি নেই। সপ্তাহের সাতদিনই তাকে কাজ করতে হবে। এ হিসাবে মাস শেষে তার আয় হবে ১ হাজার ৫০০ টাকা।

কারাগারে ঢোকার সময় শশীকলার নামে তিনটি শাড়ি ও ব্লাউজ ইস্যু করা হয়েছে। তিনি একটি ঘড়ি ও সোনার একটি চেইন জমা দিয়েছেন। দীর্ঘ ভ্রমণে শশীকলা একটু ক্লান্ত ছিলেন। রক্তের চাপ একটু বেশি ছিল। রাতে ভাত, সাম্বার( তামিল নাডুর জনপ্রিয় সবজি দিয়ে তৈরি বিশেষ তরকারি) ও সঙ্গে করে আনা ফল খেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ওষুধও খেয়েছেন।

কারাগারে শশীকলার জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা, টিভি, বোতলজাত জল ও ধ্যানকক্ষের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। তাঁর সেবায় একজন নারী কারাকর্মী রাখারও আবেদন করা হয়। কিন্তু এসব দাবি নাকচ করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

সাজার রায় ঘোষণার পরে এক কৌশল নেয় শশীকলার আইনজীবী। রায় কার্যকরে একটু সময় চেয়েছিলেন যাতে কিছু দিন বাইরে রাখা যায় শশীকলাকে। আইনজীবী কেটিএস তুলসী বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষের এজলাসে আবেদনে জানান— শশীকলা আত্মসমর্পণের আগে সব দিক গুছিয়ে নিতে কিছু দিন সময় চান। পত্রপাঠ সেই আবেদন খারিজ করে দেন পিনাকীবাবু।

উল্টে শশীকলাকে অবিলম্বে বেঙ্গালুরু আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি বলেন, ‘‘আশা করি আপনি অবিলম্বে শব্দটির অর্থ জানেন। অবিলম্বে মানে অবিলম্বে!’’ রায়ের চব্বিশ ঘণ্টা পরেও শশীকলা কেন আত্মসমর্পণ করেননি, তা নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। 

প্রসঙ্গত, হিসাববহির্ভূত সম্পত্তি রাখার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়েও দোষী সাব্যস্ত হন শশীকলা। সুপ্রিম কোর্ট বাড়তি সময় না দেওয়ায় ১৫ ফেব্রুয়ারি চেন্নাই ছেড়ে বেঙ্গালুরু গিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। তার সঙ্গে আত্মসমর্পণ করেন আত্মীয় সুধাকরণ ও ইলাবরসি। 

ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

সোনালীনিউজ/আতা

Link copied!