আজ পটুয়াখালী মুক্ত দিবস

  • পটুয়াখালী প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০১৬, ০৩:৪৩ পিএম
আজ পটুয়াখালী মুক্ত দিবস

পটুয়াখালী : ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয় পটুয়াখালী জেলা। এই দিনে পটুয়াখালী শহরকে হানাদার মুক্ত করে লাল সবুজের পতাকা উড়ান জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তবে মুক্তিযুদ্ধের সেসব গৌরমবয় ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে এখন অনেকটাই অজানা। এছাড়া জেলার মুক্তিযোদ্ধা ও বিরঙ্গনাদের সঠিক মূল্যায়ন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত স্থানগুলো সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন জেলাবাসী।

পটুয়াখালী ও বরগুনা অঞ্চলে যুদ্ধকালীন সময়ে পাক হানাদার বাহিনীর দায়িত্বে থাকা মেজর নাদের পারভেজ ও তার সৈন্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ৭ ডিসেম্বর রাতে পটুয়াখালী শহর ছেড়ে নদী পথে পালিয়ে যায়। ৮ ডিসেম্বর সকাল থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা জেলা শহরে মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ও পরে শিশুপার্কে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী যেসব স্থানে গণহত্যা চালিয়েছিলো তার অনেক স্থান এখনও রয়েছে অবহেলিত। আর যেসব স্থানে দুই একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে তা অবহেলা ও সংস্কার না করায় হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ কারণে এসব স্মৃতিস্তম্ভ সংস্কার ও যথাযথ মর্যাদায় সংরক্ষণের দাবি জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের। অপরদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলার বিরঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করে সরকারি অদেশেরও দাবি জানান তারা।

পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা খান মোশারফ হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত অনেক স্থান এখনও অবহেলায় পরে আছে, এসব স্থানসমূহ সংরক্ষণের পাশাপাশি জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখিতভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে হবে। নতুবা নতুন প্রজন্মের কাছে তা অজানাই থেকে যাবে। অপরদিকে জেলার ইটবাড়িয়া এলাকায় যে কয়েজন বীরঙ্গনারা রয়েছেন তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সন্মানীত করার ও দাবি জানান তিনি।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের স্তম্ভ নির্মাণ করা হলেও সারাবছর এসব স্তম্ভগুলো অযত্ন আর অবহেলার মধ্যেই পরে থাকে। সম্প্রতি শহরের পিডিএস মাঠ সংলগ্ন এলাকায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টে নিহত তাঁর পারিবারের সদস্যদের নাম সম্বলিত স্মৃতিস্তম্ভ এবং জাতীয় চার নেতার স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হলেও ওই এলাকায় নেই কোন সীমানা প্রাচীর। অপরদিকে এর পাশেই সারা দেশে একই নকশায় অনেক অগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হলেও দীর্ঘদিনেও তা সংস্কার করা হয়নি। এ কারণে এখন অনেক শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ও পরিচয় আর পড়া যায় না।

আর ওই এলাকায় কোনো ধরনের নিরপত্তাকর্মী ও সীমানা প্রচীর না থাকায় স্মৃতিস্তম্ভের অনেক সৌন্দর্য্য বর্ধনের ব্যবহৃত স্টীলের পাইপ চুরি হয়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে স্মৃতিস্তম্ভে গরু, ছাগল ও বেওয়ারিশ কুকুরের বিচরণ লক্ষ্য করা যায়।

আগামী প্রজন্মকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অক্ষুণ্ন রাখতে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেয়া দরকার বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোকজন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Link copied!