সাংবাদিক শামছুল ইসলামের বিরুদ্ধে জিডি, সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নিন্দা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম
সাংবাদিক শামছুল ইসলামের বিরুদ্ধে জিডি, সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নিন্দা

ছবি: সোনালীনিউজ

ঢাকা: সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্থায়ী সদস্য ও নয়া দিগন্তের সিনিয়র রিপোর্টার শামছুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন নেত্রকোনার সাবেক ডিসি বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব বনানী বিশ্বাস। গত ৫ নভেম্বর  রাজধানীর রমনা মডেল থানায় থানায় জিডিটি করেন তিনি।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জিডি প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউ, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ), রিপোর্টার্স এগেইনস্ট করাপশনের (র‌্যাক) এবং রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি)।

শামছুল ইসলাম জানান, ঐ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর অভিযোগ প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হলে তাকে নেত্রকোনার ডিসি পদ থেকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসনে ন্যস্ত করা হয়। এরপর এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।  এ ঘটনায় প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে এই কর্মকর্তা আমাকে ভয়ভীতি দেখানো ও হয়রানির উদ্দেশ্যে এই জিডি করেছেন। জিডিতে বনানী বিশ্বাস যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে এ নিন্দা ও জিডি প্রত্যাহারের দাবী জানান। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি সাংবাদিকদের উপর হামলা ও হয়রানীর ঘটনা বেড়েছে, যা উদ্বেগজনক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ঘটনার প্রকৃত বিচার হচ্ছে না। এজন্য হামলা ও হয়রানীর ঘটনা বেড়ে চলেছে। সংবাদ প্রকাশ করা একজন সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব। সে দায়িত্ব পালনে যে কোনো ঘটনা একজন সাংবাদিক তুলে ধরতে পারেন। বনানী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে নিউজ হবার পর তাকে প্রত্যাহার করা তার দুর্নীতি সংশ্লিস্টতার প্রাথমিক প্রমাণ। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ।

এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে হয়রানিমূলক জিডি প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছে সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ)।

সংগঠনটির সভাপতি মাসউদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদল এক বিবৃতিতে অবিলম্বে এ ধরনের উদ্দেশ্যে প্রণোদিত সাধারণ ডায়েরি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। নেতারা বলেন, শামছুল ইসলাম দেশের স্বনামধন্য গণমাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। জিডিতে বনানী বিশ্বাস যে অভিযোগ করেছেন সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।

বিএসআরএফের দপ্তর সম্পাদক গৌতম চন্দ্র ঘোষের সইকরা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সংবাদ প্রকাশ করা একজন সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব। সে দায়িত্ব পালনে যে কোনো ঘটনা একজন সাংবাদিক তুলে ধরতে পারেন। হুমকি-ধামকি দিয়ে সাংবাদিককে তার পেশাগত দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা যাবে না। বিএসআরএফ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।

জিডির ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে রিপোর্টার্স এগেইনস্ট করাপশনের (র‌্যাক) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কাশেম ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক। পৃথক বিবৃতিতে জিডি প্রত্যাহারে দাবি জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) সভাপতি কাজী জেবেল এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

উল্লেখ্য গত ৩০ জুলাই বনানী বিশ্বাসের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে নয়াদিগন্তে সংবাদ প্রকাশিত হয়। দুর্নীতি অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পেলে সংবাদ প্রকাশের ২৫ দিন পর ২৫ আগস্ট তাকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরপর তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

পিএস

Link copied!