ঢাকা: চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় এসেছেন স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া দেশ ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগুয়েল ওয়াংচুক।
সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল সোয়া ১০টায় তাকে বহনকারী বিমান ঢাকা অবতারণ করে। বিমানবন্দরে রাষ্ট্রীয় অতিথি রাজা ওয়াংচুককে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
এরপর রাজা ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করবেন। আজ দুপুরে প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত ও সমঝোতা স্মারকে সইয়ের কথা রয়েছে।
ভুটানের রাজা আগামীকাল ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, সকালে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউিট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল পরিদর্শন, বিকেলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
বুধবার (২৭ মার্চ)পদ্মা সেতু এবং নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন এবং ২৮ মার্চ কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে রাজা বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী রাজাকে বিদায় জানাবেন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গার্ড অব অনার প্রদান করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নবগঠিত সরকার দায়িত্বগ্রহণের পর কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের প্রথম এ সফরে ভুটানের রাজা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি তিনটি চুক্তি সই ও একটি চুক্তি নবায়নের কথা রয়েছে।
সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভুটান বাংলাদেশের প্রতিবেশি অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র। ২৫-২৮ মার্চ সফরে ভুটানের রাজা আমাদের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ভুটানের রানী, পরিবারের সদস্য, মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রাজার সফরসঙ্গী হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে স্বাস্থ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পর্যটন, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি সমন্বয়, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ট্রানজিট, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি, ভারতকে সঙ্গে নিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিনিময়ে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা, স্বল্পোন্নত হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে উদ্ভূত চ্যালঞ্জেসমূহ মোকাবিলায় সহযোগিতা আলোচনায় প্রাধান্য পাবে বলে জানান ড. হাছান।
এ সময় ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক সই ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি পুনঃনবায়নের সম্ভাবনা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগুয়েল ওয়াংচুকের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে ভুটানের জন্য উপহার হিসেবে যা থাকবে সে বিষয়েও আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি জানান, আগামী বছর থেকে দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভুটানের শিক্ষার্থী কোটা ২২ থেকে ৩০ করা, ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ভুটানের অফিসারদের জন্য দুটি আসন বরাদ্দ, ভুটানে ফরেন সার্ভিস একাডেমি স্থাপনে কারিগরি সহায়তা দেওয়া, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে ভুটানের কর্মকর্তাদের ৩ বছরব্যাপী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং সে দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা উন্নয়নে ল্যাপটপ ও ট্যাবসহ ইলেকট্রনিক ডিভাইস উপহার দেবে বাংলাদেশ।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :