প্রতীকী ছবি
দেশে নতুন সরকারি পে কমিশনের প্রস্তাবনা নিয়ে বিতর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। পে কমিশন কার্যকর হলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা বাড়বে বলে জানা গেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, শুধুমাত্র বেসিক বেতন বৃদ্ধি করলে তা টেকসই হবে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি বেতন কাঠামো মোট প্রাপ্তি বা কস্ট টু গভর্নমেন্ট (সিটিজি) ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। এতে মূল বেতন ছাড়াও বাসা ভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত, বিশেষ ভাতা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, বোনাস, ইনস্যুরেন্স এবং পেনশনসহ সব সুবিধার হিসাব থাকে। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করলে সরকারি কর্মচারীরা তাদের মোট প্রাপ্তি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন এবং বেসিক কম ভাতা বেশি মানসিকতা দূর হবে।
বিশ্বব্যাপী উদাহরণ হিসেবে ভারতের সপ্তম পে কমিশন, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামোতে পারফরম্যান্সভিত্তিক ভাতা ব্যবস্থা রয়েছে। যুক্তরাজ্যে স্যালারি ট্রান্সপারেন্সি পোর্টালের মাধ্যমে সরকারি বেতন প্রকাশ করা হয়, যা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের সরকারি খাতের অপারেশন খরচ অত্যন্ত উচ্চ এবং বাজেটের প্রায় ২৮ শতাংশ বরাদ্দ বেতন, ভাতা ও পেনশনে যায়। এ অবস্থায় অপ্রয়োজনীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা এবং বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের আয়ে চলার দায়িত্ব দেয়া জরুরি।
পূর্ববর্তী পে কমিশনগুলোতে দুর্নীতি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে বর্তমান প্রস্তাবিত বেতন বৃদ্ধিও সমস্যা তৈরি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পে স্কেল সংস্কারের আগে সরকারি সম্পদের হিসাব পরিদর্শন, দুর্নীতিগ্রস্তদের বাদ দেওয়া এবং মোট প্রাপ্তি ভিত্তিক স্বচ্ছ কাঠামো নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, টেকসই এবং স্বচ্ছ সরকারি পে স্কেল সংস্কার না হলে, সরকারি খাতের বাইরের জনগণের ওপর চাপ বাড়তে থাকবে, যা অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :