‘হ্যালো’ অ্যাপে অটোরিকশা চলবে পহেলা বৈশাখ থেকে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০১৮, ০১:৫১ পিএম
‘হ্যালো’ অ্যাপে অটোরিকশা চলবে পহেলা বৈশাখ থেকে

ঢাকা : মোবাইল অ্যাপের সাহায্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সিএনজি অটোরিকশা চলবে পহেলা বৈশাখ থেকে। এ গণপরিবহনের চালকদের অনিচ্ছা ও অজ্ঞতার কারণে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গত ১ মার্চ উবার, পাঠাও ও স্যামের মতো সেবাটি চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চালকদের প্রস্তুত করে আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে এ রাইড সেবাটি চালু করবে ‘হ্যালো’ কর্তৃপক্ষ।

গত ১২ নভেম্বর উবার, পাঠাওসহ অ্যাপভিক্তিক পরিবহন সার্ভিস বন্ধের দাবি জানিয়ে বিতর্কের মুখে পড়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা। এর কয়েকদিন পর সংগঠনের নেতারা গণমাধ্যমকে জানান, সিএনজি অটোরিকশা সেবাও তারা অ্যাপের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এ জন্য টপ আই আই নামে একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ‘হ্যালো’ অ্যাপে চুক্তিবদ্ধ হয় ঐক্য পরিষদ। এরপর ১৬ জানুয়ারি ‘হ্যালো’র পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে ১ মার্চ থেকে রাজধানীতে অ্যাপে অটোরিকশা চালুর ঘোষণা দেয়।

ওই দিন সংবাদ সম্মেলনে টপ আই আই-এর মুখপাত্র অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী বলেছিলেন, ‘হ্যালো’র মাধ্যমে রাজধানীতে সিএনজি অটোরিকশা সার্ভিস চালু হবে ১ মার্চ থেকে। সরকারি নীতিমালার ভিত্তিতেই এই অ্যাপ চলবে, সেখানে যে ভাড়া নির্ধারণ করা হবে সেভাবেই মিলবে এই সেবা।এরপর ‘হ্যালো’ কর্তৃপক্ষ ৫০০ অটোরিকশা চালককে স্মার্ট ফোনে অ্যাপটি পরিচালনে প্রশিক্ষণ দেন। কিন্তু প্রযুক্তি জ্ঞান না থাকায় চালকদের বেশিরভাগ

ই অ্যাপে রাইড সেবা দিতে দক্ষতা অর্জন করেনি। এ বিষয়ে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে হ্যালো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল ১ মার্চ সেবাটি চালু হচ্ছে না। তবে ১০ মার্চ থেকে ‘হ্যালো’ অ্যাপে রাইড চালু হতে পারে। কিন্তু এবারো চালকদের কারণে সেবাটি চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ‘হ্যালো’র পরিচালক রাকিবুল হাসান বলেন, রাইড সেবা দিতে আমরা প্রযুক্তিগতভাবে প্রস্তুত রয়েছি। কিন্তু অটোরিকশা চালকদের অনিচ্ছা ও অজ্ঞতায় মার্চে সেবাটি চালু করা যাচ্ছে না। কারণ, চালকরা অ্যাপে যাওয়া এবং সেখান থেকে আমাদের কমিশন দিতে রাজি না হওয়ায় সেবাটি চালু করা যায়নি। আমরা চেয়েছি যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করতে। আমাদের কমিশন চালকদের কাছ থেকে নেব, কিন্তু সেটি তারা দিতে রাজি ছিল না। পরে অবশ্য তাদের আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, অ্যাপে নিয়মতান্ত্রিকভাবে চললে আগের চেয়ে অটোরিকশায় আয় ভালো হবে। চালকদের সঙ্গে আমাদের আলাপ আলোচনায় এখন সমঝোতায় পৌঁছেছি। আগামী পহেলা বৈশাখ ‘হ্যালো’ রাইড পুরোদমে চালু হবে।

‘হ্যালো’ সূত্রে জানা গেছে, অ্যাপসে রিকোয়েস্ট দিলেই সিএনজি অটোরিকশাসহ চালক-গ্রাহকের কাছে হাজির হবেন। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার হার অনুসারে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। প্রথম দুই কিলোমিটার ৪০ এবং পরের প্রতি কিলোমিটার ১২ টাকা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি মিনিটের ওয়েটিং চার্জ ২ টাকা ধরা হয়েছে। আর অ্যাপস ব্যবহারের জন্য চালককে শতকরা ১৫ টাকা দিতে হবে টপ আই ই কোম্পানিকে।

এ বিষয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব সাখাওয়াৎ দুলাল বলেন, আমরা অটোরিকশা চালকরাও প্রযুক্তিতে যেতে চাই। কিন্তু চালকদের বেশিরভাগই লেখাপড়া না জানায় স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে পারছে না। তবে ‘হ্যালো’ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের প্রায় ৫০০ চালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এদের অনেকেই পরীক্ষামূলকভাবে অ্যাপে গাড়ি চালাচ্ছে। এখনো নতুন চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছে।

আশা করছি, আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে প্রায় সকল চালকই অ্যাপে গাড়ি চালাতে পারদর্শী হয়ে যাবেন। এরপর পহেলা বৈশাখ থেকে পুরোদমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে অটোরিকশা সার্ভিস অ্যাপে চলবে বলে আশা প্রকাশ করেন শ্রমিক নেতা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Link copied!