স্বামী-সন্তানকে পেতে হুইল চেয়ারে ঘুরছেন আহত অ্যানী

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০১৮, ০৩:৩৯ পিএম
স্বামী-সন্তানকে পেতে হুইল চেয়ারে ঘুরছেন আহত অ্যানী

ঢাকা: এখনও প্রিয়জনের মৃত্যুর কথা জানেন না কাঠমান্ডু ট্রাজেডিতে নিহত আলোকচিত্রী এফএই প্রিয়কের স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানী। স্বামী আর সন্তানের খোঁজে চিকিৎসকের সহযোগিতায় হুইল চেয়ারে করে হাসপাতালের বারান্দায় ঘুরছেন তিনি।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদনের বর্ণনামতে- কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি ছটফট করছেন আর সন্তানকে বুকে এনে দেওয়ার জন্য ডাক্তার-নার্সদের অনুরোধ করছেন। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্যের স্মৃতি মনে পড়তেই শিউরে উঠছেন আহত অ্যানী। স্বামী আর একমাত্র কন্যাকে হারিয়ে অ্যানী মানসিকভাবে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছেন। 

আনমনে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকছেন আর গাল গড়িয়ে অশ্রু ঝরছে। এক পর্যায়ে অ্যানী ডাক্তার ও নার্সকে অনুরোধ করে তাকে হাসপাতালের বাইরে একটু ঘুরিয়ে আনার জন্য। স্বামী আর কন্যাকে খোঁজার জন্য তিনি বাইরে বের হতে চান। তার অনুরোধেই বেলা দু’টার দিকে একজন চিকিৎসক ও নার্স হুইল চেয়ারে করে অ্যানীকে হাসপাতালের অষ্টম তলার বারান্দায় কিছু সময় ঘুরিয়ে আনেন। 

এ সময় বারবার ডাক্তারের কাছে তাকে কিছু সময় একা থাকার সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ করেন অ্যানী। মাঝে মাঝে বলে ওঠেন, 'আমার বাবুরে এনে দেন। ও একা থাকতে পারবে না। আমার প্রিয়ক কোথায়?' 

অ্যানীর বেডের পাশেই অন্য একটি বেডে শুয়ে থাকা দুর্ঘটনায় আহত মেহেদী হাসান মাসুম বলেন, তিন বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে বাঁচতে গিয়ে প্রাণ হারালেন এফএইচ প্রিয়ক। ইচ্ছে করলে প্রিয়ক একা বিমান থেকে লাফিয়ে বাইরে বের হয়ে আসতে পারতেন। কিন্তু চোখের সামনে কন্যার এমন মৃত্যু সইতে পারবেন না জেনেই হয়তো তাকে কোলে নিয়ে বের হতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। 

তিনি বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধান। তার স্ত্রী স্বর্ণা আর প্রিয়কের স্ত্রী অ্যানীকে নিয়ে দ্রুত তিনি বের হয়ে এসে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। 

প্রসঙ্গত, গত সোমবার নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস বাংলার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মেয়েসহ প্রাণ হারিয়েছেন প্রিয়ক। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৪৯ জন। ২০১২ সালে বিয়ে করেন প্রিয়ক। ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর কন্যা সন্তানের বাবা হন তিনি। নাম রাখা হয় তামারা প্রিয়ন্ময়ী। 

সোনালীনিউজ/জেএ

Link copied!