অনুমোদন ছাড়াই গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি ছিলেন ড. ইউনুস

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০১৮, ১২:১৫ পিএম
অনুমোদন ছাড়াই গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি ছিলেন ড. ইউনুস

ঢাকা: কোন অনুমোদন ছাড়াই ড. ইউনুস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হিসেবে ছিলেন বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে মাওয়া গোলচত্বরে এক সুধী সমাবেশের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ দাবি করেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন- আইনি বাধ্যবাধকতায় গ্রমীণ ব্যাংক থেকে সরে যেতে হয়েছে ড. ইউনুসকে। ড. ইউনুসের প্ররোচনায় বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দেয়।

অনেকের ধারণা ছিল বিশ্বব্যাংক ছাড়া পদ্মা সেতু হবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন- পদ্মা সেতুর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হয়েছে আমাদের দেশের কিছু মানুষ। পদ্মা সেতু প্রকল্প বন্ধ করে দিতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। তদন্ত শেষে প্রমাণিত হয়েছে সব অভিযোগ মিথ্যা।

২০১০ সালে পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর কথা থাকলেও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থায়ন স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। পরে ২০১৩ সালের ৩০ জুন পদ্মা সেতুতে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয় বিশ্ব ব্যাংক। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এবং আওয়ামী লীগ নেতারা বারবার দুর্নীতির অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করে আসছিল।

দীর্ঘ টানাপড়েনের এক পর্যায়ে বিশ্ব ব‌্যাংককে ‘না’ করে দিয়ে নিজেদের অর্থে পদ্মাসেতু নির্মাণে হাত দেয় বাংলাদেশ সরকার। এর পর কানাডার একটি আদালতের রায়ে ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ার কথা প্রকাশের পর নতুন করে আলোচনায় আসেন ড. ইউনূস।

ড. ইউনূসের জন্য ‘সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের লবিংয়ে’ বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয় বলে প্রধানমন্ত্রী বারবার বলে আসছেন। পদ্মা সেতুর অগ্রগতি কাজ পরিদর্শনে গিয়েও একই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের ইচ্ছা ছিল পদ্মা সেতুর সঙ্গে রেল সেতু নির্মাণ করার। বিশ্ব ব্যাংক ও এডিবি এ কাজে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। কিন্তু ড. ইউনূসের প্ররোচণায় বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুর জন্য অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা কারও সাহায্য নেব না। আমি পার্লামেন্টে ঘোষণা দিলাম। বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা। তারা আমাকে সহযোগিতা করলেন।’’

শেখ হাসিনা বলেন, “দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এই সেতুর ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এটি আমাদের জন্য সৌভাগ্য।”

তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু চালু হলে প্রবৃদ্ধি প্রায় ২ ভাগ বাড়বে। প্রবৃদ্ধি ১০ ভাগ হয়ে যেতে পারে। মানুষের অবস্থার আরও উন্নতি হবে। আর্থিক দুরবস্থা থাকবে না।”

এর আগে তিনি ১১টার দিকে মাওয়া প্রান্তে পৌঁছান। তার পরই মুন্সীগঞ্জের মাওয়া গোলচত্বরে পদ্মা সেতুর নামফলক ও রেলপ্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সমাবেশস্থলে রোববার সকাল থেকেই হাজির হয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। যদিও তাঁরা সমাবেশের মূল প্যান্ডেলে জায়গা পাবেন না। তবে সমাবেশস্থলের আশপাশে নেতাদের নাম ও ছবি সংবলিত টি-শার্ট, ক্যাপ ও বিভিন্ন ধরনের ব্যানার নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন দলটির কর্মীরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর উপলক্ষে পদ্মাপাড়ের তিন জেলা মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

বিকেলে প্রধানমন্ত্রী মাদারীপুরের শিবচরে ইলিয়াস আলী ঘাটে দলীয় জনসভায় বক্তব্য দেবেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Link copied!