দেশের শীর্ষ ৬ রাজনীতিবিদের শিক্ষাগত যোগ্যতা জেনে নিন

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২০, ১২:৩৫ পিএম
দেশের শীর্ষ ৬ রাজনীতিবিদের শিক্ষাগত যোগ্যতা জেনে নিন

ঢাকা : শিক্ষা ছাড়া একটা জাতি কখনো উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে যেতে পারে না। তাই বলা হয় শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যারা রাজনীতি করেন তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কেমন সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না, আবার কখনো জানার কৌতুহলও হয়নি অনেকের। কিন্তু সবার এ বিষয়ে জেনে রাখা উচিৎ। কারণ একজন শিক্ষিত ব্যক্তি যখন রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করবে, তখনি কেবল একটি জাতি শিক্ষিত হয়ে উঠবে এবং এগিয়ে যাবে দেশ। আজ পাঠকদের আমরা জানাবো বাংলাদেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদদের কার শিক্ষার দৌঁড় কতোটুকু। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক।

শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা তিনবার এবং সব মিলিয়ে চতুর্থবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদি প্রধানমন্ত্রী। টুঙ্গিপাড়ায় ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। তার পিতা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা। ১৯৫৬ সালে তিনি টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ছোটবেলা থেকে তিনি খুব মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। শেখ হাসিনা ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এছাড়াও রাশিয়া সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেট ইউনিভার্সিটিসহ বিশ্বের অনেক দেশের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাধিক সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছেন তিনি।

বেগম খালেদা জিয়া

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপার্সন ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বেগম খালেদা জিয়ার প্রকৃত নাম খালেদা খানম পুতুল। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন (তাঁর জন্ম তারিখ নিয়ে বিতর্ক আছে)। তিন বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। বাবা জনাব ইস্কান্দর মজুমদার এবং মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। আদি পিতৃ-ভিটা ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মজুমদার বাড়ি। বাবা জনাব ইস্কান্দর মজুমদার ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। খালেদা জিয়ার স্কুলজীবন শুরু হয় পাঁচ বছর বয়সে দিনাজপুরের মিশন স্কুলে। এরপর দিনাজপুর গার্লস স্কুলে ভর্তি হন। তিনি এই স্কুল থেকেই অষ্টম শ্রেণী পাশ করেন। পরে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় আর পড়াশুনা করেননি খালেদা জিয়া।

সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি হিসেবে তাকেই ভাবা হয়ে থাকে। তার প্রকৃত নাম সজীব আহমেদ ওয়াজেদ। তিনি ২৭ জুলাই ১৯৭১ সালে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে জন্ম নেন। তার বাবা এম এ ওয়াজেদ মিয়া, একজন খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয় উপদেষ্ঠা এবং বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় তরুণ রাজনৈতিক ব্যক্তি। বাংলাদেশের তরুণ রাজনীতিবিদদের মধ্যে উচ্চ শিক্ষিত একজন রাজনীতিবিদ হলেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

১৯৭৫ সালে তার নানা শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা হওয়ার পরে, জয় মায়ের সাথে জার্মানী এবং লন্ডন হয়ে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।ফলে তার শৈশব এবং কৈশোর কেটেছে ভারতে। নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজ হতে স্নাতক করার পর যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এ্যট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করেন। পরবর্তীতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক-প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি  স্থায়ীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বাস করছেন।

তারেক রহমান

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় পুত্র তারেক রহমান। তিনি বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জাতীয়তাবাদী দলের নেতা তিনি। তারেক রহমানের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর পাকিস্তানের করাচিতে।

তারেক ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ হতে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপরে তিনি সেন্ট জোসেফ কলেজ এবং ঢাকা রেসিডেনসিয়াল কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে আইন বিভাগে ও পরে লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি স্নাতক শ্রেনীর পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। পরবর্তীতে তিনি পেশা হিসেবে ব্যবসাকে বেছে নিয়ে বস্ত্রশিল্প ও নৌ-যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ করেন। বর্তমানে তারেক রহমান লন্ডনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশাস্ত্র নিয়ে পড়াশুনা করছেন বলে জানা গেছে।

ওবায়দুল কাদের

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশের আরেকজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ। ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি, নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বড় রাজাপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন ওবায়দুল কাদের। বাবা মোশারফ হোসেন সরকারি চাকুরি ছেড়ে দিয়ে জনশিক্ষা স্বার্থে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা বেছে নেন। ওবায়দুল কাদের বসুরহাট সরকারি এএইচসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি ও নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে মেধা তালিকায় স্থান নিয়ে এইচএসসি পাশ করেন। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্সসহ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।

মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশের আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১ আগস্ট ১৯৪৮ সালে ঠাকুরগাঁও জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মির্জা রুহুল আমিন ও মাতার নাম মির্জা ফাতেমা আমিন। শিক্ষাজীবনে মির্জা ফখরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৭২ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষা ক্যাডারে ঢাকা কলেজে অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেন।

সোনালীনিউজ/এএস

Link copied!