আ.লীগ সম্মেলন : পদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় নেতারা!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৬, ১০:২৮ পিএম
আ.লীগ সম্মেলন : পদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় নেতারা!

আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের আর খুব বেশি দেরি নেই। সম্মেলন অনুষ্ঠানের সময় যত কাছে আসছে, নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহের পাশাপাশি বাড়ছে উৎকণ্ঠাও। তবে এই উৎকণ্ঠা সাধারণ নেতাকর্মীদের নয়, এটা মূলত তাদেরই, যারা পদপ্রত্যাশী।

দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বেশির ভাগ জ্যেষ্ঠ নেতার মধ্যেই ‘বাদ পড়ছি, না থাকছি’ এই দুশ্চিন্তা পেয়ে বসেছে। পদোন্নতি বা আগের চেয়ে ‘ভালো পদ পাচ্ছেন কি না’ সেই চিন্তায়ও আছেন অনেকে। তাই নেতৃত্ব নির্বাচনে ভূমিকা রয়েছে এমন জায়গাগুলোতে ভিড় করছেন ‘চিন্তিত’ নেতারা। সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করছেন তারা। যদিও সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, নতুন যে কমিটি আসছে তাতে বড় ধরনের কোনো চমক থাকবে না।

সম্মেলন সামনে রেখে দলের দুর্দিনে নেতাকর্মীদের মধ্যে কাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা আছে সেই বিষয়গুলোও এখন সামনে উঠে আসছে। সর্বশেষ ওয়ান/ইলেভেনের সময় কার কী ভূমিকা ছিল তা নিয়ে একে অপরের মধ্যে আলোচনার ধুম লেগেছে। দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সম্প্রতি প্রস্তুতি কমিটির এক বৈঠকে এই আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। সেদিন থেকেই ‘ওয়ান/ইলেভেন’ নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। আর এটিই তাদের ত্যাগ প্রমাণ করার একমাত্র হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

শুধু ত্যাগ-তিতিক্ষাই নয়, দল ক্ষমতায় আসার পরে কারা বেশি বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন তা নিয়েও চলছে আলোচনা। দলের একটি অংশ মনে করে, এসব আলোচনার সূত্রপাত হওয়া মানে একটি অংশকে ঘায়েল করা। আরেকটি অংশ মনে করে, এসব আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এগুলো ইতিহাসের একটি অংশ। এসব ঘটনা পাশকাটিয়ে রাজনীতি করা সম্ভব নয়।

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সর্বশেষ সেনাসমর্থিত সরকারের সময় আমাদের দলীয় নেতাদের কার কী ভূমিকা ছিল তা এখন বেশ মুখরোচক বিষয় ধানমণ্ডিতে সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে। এর ফলে একপক্ষ যেমন অসন্তুষ্ট, আরেকপক্ষ তেমনি সন্তুষ্ট। সন্তুষ্ট হওয়া নেতারা মনে করেন, ওয়ান/ইলেভেনে ভূমিকা রাখায় তারাই নেতা হওয়ার দাবিদার।’

সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য বলেন, ‘গত ২২ সেপ্টেম্বর ধানমণ্ডি কার্যালয়ে ওয়ান/ইলেভেনের আলোচনা শুরু হলে সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতা সেখান থেকে উঠে যেতে বাধ্য হন।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, ‘সম্মেলন এসেছে তাই বিভিন্ন নেতাকর্মীর নানা জল্পনা-কল্পনা থাকতে পারে। আশা-নিরাশার বিষয়টিও নেতাকর্মীদের ভেতরে কাজ করবে। তিনি বলেন, এসবের মধ্য দিয়ে যারা যোগ্য, দক্ষ ও মেধাবী তারাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসবেন।’         

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘আওয়ামী লীগে নেতা নির্বাচন হয় সম্মেলনের ভেতর দিয়ে। তাই এ দলটির নেতা কে হবেন, না হবেন সেটা আগে থেকে বলা যায় না। হানিফ বলেন, যারা যোগ্য, মেধাবী, দলকে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা রাখেন তারাই নেতা হয়ে কমিটিতে আসবেন।’

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা সম্মেলনের মধ্য নিয়ে নেতা নির্বাচন করে। তাই আগে থেকে নেতা কে হচ্ছেন তা বলা মুশকিল এ দলে। তিনি বলেন, যোগ্যতা-দক্ষতা বিচার-বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।’ মতিয়া বলেন, ‘সম্মেলন এসেছে নিয়ম অনুযায়ী তা হবে এবং নেতৃত্ব নির্বাচন হবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Link copied!