ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা: জুলাই জাতীয় সনদের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচনে পাঁচ শতাংশ নারীকে সরাসরি দলীয় মনোনয়ন দেয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে বিএনপি। দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের খসড়া তালিকায় আছেন ১৫ জন নারী নেত্রীর নাম।
আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপির প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত। সম্প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দশ সাংগঠনিক বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জুলাই সনদের বিধান অনুযায়ী সংরক্ষিত ৫০ নারী আসনের বাইরে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে হবে। সেই মোতাবেক ১৫ জন নারী নেত্রীকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তাদের সবাই নিজ নির্বাচনী এলাকায় পরিচিত এবং দলীয় জরিপেও এগিয়ে আছেন।
খসড়া তালিকায় আছেন মানিকগঞ্জ-৩ আসনে প্রয়াত বিএনপি নেতা ও সাবেক মন্ত্রী হারুনার রশিদ খান মুন্নুর মেয়ে আফরোজা খান রিতা। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। তার মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত।
ঢাকা-১৪ আসনে সবুজ সংকেত পেয়েছেন ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের সমন্বয়কারী সানজিদা তুলি। গুম হওয়া বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন তিনি। গুমবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকার জন্য দেশ-বিদেশে পরিচিতি পেয়েছেন।
সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সাংসদ রেহেনা আক্তার রানু ফেনী-২ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন। নাটোর-১ আসনে রয়েছেন প্রয়াত প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুল।
নীলফামারি-৪ আসনে আলোচনায় আছেন গায়িকা বেবী নাজনীন। আর রংপুর-৩ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে রিটা রহমান। সিরাজগঞ্জ-১ আসনে আবারও লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সংগীতশিল্পী কনক চাঁপা।
শেরপুর-১ আসনে বিএনপি নেতা হযরত আলীর মেয়ে চিকিৎসক সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। মাদারিপুর-২ আসনে মাঠে কাজ করছেন ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা হেলেন জেরিন খান।
ফরিদপুর-২ আসনে লড়বেন সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। বিএনপির ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর-৩ আসনে নাম উঠেছে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে নায়াবা ইউসুফের।
হবিগঞ্জ-৪ আসনে আলোচনায় আছেন সাবেক নারী সাংসদ শাম্মী আক্তার। সিলেট-২ আসনে বিএনপির টিকিট পেতে পারেন এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা।
ঝালকাঠি-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হতে পারেন ইলেন ভুট্টো। ২০০১ সালে এই আসনে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুকে পরাজিত করেছিলেন তিনি।
যশোর-২ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সাবিরা নাজমুল মুন্নীর। তার স্বামী নাজমুল ইসলাম ২০১১ সালে অপহরণের পর খুন হন।
একই পরিবার থেকে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে আলোচনায় রয়েছেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাবেক সাংসদ রুমানা মাহমুদ ও হাসিনা আহমেদ। এছাড়া রুমিন ফারহানা, মাসউদা আফরোজ হক শুচি ও নেওয়াজ হালিমা আরলিসহ আরও কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে।
জোট শরিকদের জন্য ৫০ আসন ছাড়তে পারে বিএনপি। সেক্ষেত্রে নারী মনোনয়ন ১৫ থেকে কিছুটা কমে আসতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নারী নেতৃত্বে বিএনপির এই উদ্যোগ নির্বাচনে নতুন বার্তা দেবে এবং দলে নারীর অংশগ্রহণ আরও বাড়াবে।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :