ফাইল ছবি
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট-২ আসন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএএইচ সেলিম, যিনি এলাকায় পরিচিত সিলভার সেলিম নামে। বিএনপি এখনো বাগেরহাটের কোনো আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা না করলেও তাঁর এই ঘোষণায় স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সিলভার সেলিম নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে বাগেরহাটের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিনি জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী প্রার্থী শেখ হেলাল উদ্দিনকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এলাকায় একাধিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি।
সংসদ সদস্য থাকাকালে শহররক্ষা বাঁধ, মুনিগঞ্জ সেতু, মাজেদা বেগম কৃষি প্রযুক্তি কলেজ, বেলায়েত হোসেন ডিগ্রি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরেন সিলভার সেলিম। তাঁর দাবি, ওই সময় বাগেরহাটে যে উন্নয়নের ধারা শুরু হয়েছিল, পরবর্তী সময়ে তা থমকে যায়।
বিএনপি ক্ষমতা হারানোর পর এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর দীর্ঘ সময় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের ভাষ্য, রাজনৈতিক প্রতিকূলতা ও ক্ষমতাসীন দলের রোষানলের কারণেই তিনি প্রকাশ্য রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের পতনের পর সিলভার সেলিম আবার সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরার ঘোষণা দেন। নিজ এলাকায় আগমন উপলক্ষে আয়োজিত গণসংবর্ধনায় বিপুল জনসমাগম দেখা যায়। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতে, এই উপস্থিতি তাঁর জনভিত্তি ও গ্রহণযোগ্যতারই প্রতিফলন।
সিলভার সেলিম নিজেকে একজন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচয় দেন। তিনি বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। নির্বাচিত হলে বাগেরহাট-২ আসনকে একটি আধুনিক অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত করতে চান তিনি। শিল্পায়ন, তরুণদের কর্মসংস্থান এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন তাঁর অগ্রাধিকার।
তিনি জানান, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও তিনি নির্বাচনে থাকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর এই অবস্থান বাগেরহাটের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ তৈরি করেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
প্রায় দুই দশক পর সিলভার সেলিমের সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরা এবং বিএনপির ফাঁকা আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন হিসাব-নিকাশের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :