‘নিরাপত্তা ছাড়াই গার্ডার ঝুলিয়ে রেখেছে তারা’

  • নিজস্ব প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২২, ০৬:০৯ পিএম
‘নিরাপত্তা ছাড়াই গার্ডার ঝুলিয়ে রেখেছে তারা’

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: নববধূ রিয়া আক্তার একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলেন। দুর্ঘটনা নিয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘দুইটা টাকা লাভের জন্য নিরাপত্তা ছাড়াই ব্যস্ত রাস্তায় গার্ডার ঝুলিয়ে রেখেছে তারা। আমার তো সব শেষ হয়ে গেল। তারা আমার এমন সর্বনাশ করল।’

সোমবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর উত্তরায় প্রাইভেট কারে বাস ট্রানজিট প্রকল্পের (বিআরটি) নির্মাণাধীন উড়ালসড়কের গার্ডারচাপায় পাঁচজন নিহত হন। বেঁচে যান কেবল গাড়িতে থাকা নবদম্পতি রিয়া আক্তার ও রেজাউল করিম হৃদয়। দুর্ঘটনায় মা, খালা, খালাতো ভাই–বোন ও শ্বশুরকে হারিয়েছেন রিয়া।

রিয়া যেন কাঁদতেই ভুলে গেছেন। বলেন, ‘আমার মা (ফাহিমা আক্তার) মারা গেল। এই মা আমাকে কত কষ্ট করে বড় করল। বাবার মতো শ্বশুর (আইয়ুব আলী) মারা গেল।’

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে রিয়ার সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, ভেতরে তখন রিয়ার মা, খালা, শ্বশুরসহ পাঁচ স্বজনের লাশের ময়নাতদন্ত চলছিল।

যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁরা হলেন রিয়া আক্তারের শ্বশুর আইয়ুব আলী হোসেন রুবেল (৫৫), রিয়ার মা ফাহিমা আক্তার (৩৮), রিয়ার খালা ঝর্না আক্তার (২৭), ঝর্না আক্তারের দুই শিশুসন্তান জান্নাতুল (৬) ও জাকারিয়া (৪)।

মর্গের সামনে রিয়া আক্তারের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, পাশেই ছিলেন তাঁর স্বামী রেজাউল করিম হৃদয়। দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দর পার হওয়ার পরে প্রজেক্টের গার্ডার ঝুলে ছিল রাস্তার ওপর। ওটার নিচ দিয়ে সব গাড়ি যাচ্ছিল। অন্য গাড়ি যেভাবে যাচ্ছিল, আমাদের গাড়িও যাচ্ছিল। এ সময় গাড়ির ওপর গার্ডার আছড়ে পড়ে। গাড়ির গ্লাস ভেঙে স্থানীয় লোকজন আমাকে ও রিয়াকে বের করে।’

গত শনিবার রিয়া ও রেজাউলের বিয়ে হয়। গতকাল কাওলায় রেজাউলের বাসায় বউভাতের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠান শেষে রেজাউল সাভারের আশুলিয়ার খেজুরবাগানে শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন।

রেজাউল বলেন, ‘বাবা বলল, তুমি যেহেতু শ্বশুরবাড়ি যাবা, আমি তোমাকে গাড়িতে করে দিয়ে আসি। আমি গাড়িতে সামনে বাবার সঙ্গে বসি। আমার শাশুড়ি, খালাশাশুড়ি ও স্ত্রী পেছনের সিটে বসেন।’

এরপর উত্তরায় ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটে।

সোনালীনিউজ/এটি/এসআই

Link copied!