ঢাকা : কবিরা গুনাহ। অর্থ বড় গুনাহ, যা তাওবা ছাড়া মাফ হয় না। একটি গুনাহই জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট, যদি আল্লাহতায়ালা মাফ না করেন। আমরা যেন আল্লাহতায়ালার নাফরমানি থেকে বেঁচে তাঁর সন্তুষ্টির পথে চলতে পারি তাই এখানে সংক্ষিপ্তাকারে কোরআন-হাদিস ও ফিকহি কিতাব থেকে একশ কবিরা গুনাহের একটি তালিকা পেশ করা হলো-
১. আল্লাহতায়ালার সাথে কাউকে শরিক করা।
২. পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া।
৩. নামাজে অবহেলা করা।
৪. জাকাত না দেওয়া।
৫. ওজর ব্যতীত রমযানের রোজা না রাখা।
৬. সামর্থ্য থাকা সত্ত্বে হজ্ব না করা।
৭. আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা।
৮. অমুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা।
৯. জাদু-টোনা করা।
১০. মিথ্যা বলা।
১১. আত্মহত্যা করা।
১২. মিথ্যা শপথ করা।
১৩. ঘুষ নেওয়া ও দেওয়া।
১৪. কাউকে গালি দেওয়া।
১৫. চাঁদাবাজি করা।
১৬. পেশাবের ছিটা থেকে পবিত্র না হওয়া।
১৭. জুলুম-অত্যাচার করা।
১৮. সুদ নেওয়া ও দেওয়া।
২৯. দ্রব্যের দোষ গোপন রেখে তা বিক্রি করা।
২০. এতিমের মাল আত্মসাৎ
২১.আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি মিথ্যাচার করা।
২২. জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা।
২২. শাসক কর্তৃক জনগণকে জুলুম করা।
২৪. অবৈধভাবে সম্পদ উপার্জন করা।
২৫. মদ পান করা।
২৬. জুয়া-লটারি খেলা।
২৭. মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।
২৮.সতী-সাধ্বী পুরুষ বা নারীর প্রতি জেনার অপবাদ দেওয়া।
২৯. গনিমতের মাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করা।
৩০. চুরি করা।
৩১. ডাকাতি, রাহাজানি, অপহরণ ও ছিনতাই করা।
৩২. ঋতুকালীন সময় স্ত্রী সহবাস করা।
৩৩. আল্লাহতায়ালা ব্যতীত অন্য কারো নামে শপথ করা।
৩৪. মাহরাম ব্যতীত নারী-পুরুষের মুসাফাহা করা।
৩৫. স্ত্রী স্বামীর বিছানায় শোয়া থেকে বিরত থাকা।
৩৬. হারাম খাদ্য গ্রহণ করা। ৩৭. সমকামিতায় লিপ্ত হওয়া।
৩৮. জেনা-ব্যভিচার করা।
৩৯. নিষিদ্ধ স্থানে সম্পদ ব্যয় করা।
৪০. অন্যায় বিচার করা।
৪১. পায়ুপথে স্ত্রী সহবাস করা।
৪২. পরিবারবর্গের অশ্লীল কাজকে প্রশ্রয় দেওয়া।
৪৩. তালাকপ্রাপ্ত নারীকে শুধু হিলার জন্য বিয়ে করা।
৪৪. পরনারীর সাথে নির্জনে একত্রিত হওয়া।
৪৫. লোক দেখানো ইবাদত করা।
৪৬. দুনিয়ার জন্য এলমে দিন অর্জন করা।
৪৭. আমানতের খিয়ানত করা।
৪৮. দান করে খোটা দেওয়া।
৪৯. তাকদিরকে বিশ্বাস না করা।
৫০. গোপনে কান পেতে কারো কথা শ্রবণ করা।
৫১. চুগলখোরি করা।
৫২. কোনো মুসলমানকে অহেতুক অভিসম্পাত করা।
৫৩. ওয়াদা ভঙ্গ করা।
৫৪. জাদুকর, জ্যোতিষী ও গণকের কথা কথা বিশ্বাস করা।
৫৫. স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের অধিকার খর্ব করা।
৫৬. প্রাণীর ছবি অঙ্কন করা।
৫৭. বিলাপ করে কান্নাকাটি করা।
৫৮. কারো চেহারায় আঘাত করা।
৫৯. দম্ভ ও অহংকার প্রকাশ করা।
৬০. কর্মচারী, দুর্বল শ্রেণির মানুষ এবং জীবজন্তুর সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করা।
৬১. শুধু চিত্তবিনোদনের জন্য পশুপাখি শিকার বা হত্যা করা।
৬২. প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া।
৬৩. একাধিক স্ত্রীর মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করা।
৬৪. মুসলমানদের মাঝে অনৈক্য সৃষ্টি করা।
৬৫. খোদাভীরু লোকদেরকে কষ্ট দেওয়া।
৬৬. টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা।
৬৭.পুরুষের জন্য স্বর্ণালংকার ও রেশম ব্যবহার করা।
৬৮. অন্যায় কাজে বাধা না দেওয়া।
৬৯. আল্লাহতায়ালা ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবাই করা।
৭০. পিতামাতা ছাড়া অন্য কাউকে পিতৃরূপে স্বীকৃতি দেওয়া।
৭১. তর্কবিতর্কের মাধ্যমে সত্যের বিরোধিতা
৭২. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা।
৭৩. প্রয়োজনীয় পানি অন্যের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে না দেওয়া।
৭৪. ওজনে কম দেওয়া।
৭৫.আল্লাহতায়ালার আজাব-গজব সম্পর্কে উদাসীন থাকা।
৭৬. আল্লাহতায়ালার রহমত হতে নিরাশ হওয়া।
৭৭. শরিয়তসম্মত ওজর ব্যতীত নামাজের জামাআত ত্যাগ করা।
৭৮. শরিয়তসম্মত ওজর ব্যতীত জুমা ও ঈদের নামাজ ত্যাগ করা।
৭৯. শরিয়তবিরোধী ওসিয়ত করা।
৮০. ধোঁকাবাজি ও প্রতারণা করা।
৮১. মানুষের গোপনীয় ক্ষতিকর বিষয় প্রকাশ করা।
৮২.সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-এর সমালোচনা করা বা তাদের গালি দেওয়া।
৮৩. নারীদের পর্দাহীন হয়ে বাইরে যাওয়া।
৮৪. মাহাররম ছাড়া মহিলাদের সফর করা।
৮৫. পরনারীর প্রতি ইচ্ছাকৃত দৃষ্টি দেওয়া।
৮৬. জুম্মার আজানের পর ক্রয়-বিক্রয় করা।
৮৭. শ্রমিকের পারিশ্রমিক বা চুক্তিভিত্তিক ভাড়ায় কম দেওয়া।
৮৮. বিনা প্রয়োজনে ভিক্ষা করা।
৮৯. ঋণ আদায়ের টালবাহানা করা।
৯০. গানবাজনা বাজানো ও তা শ্রবণ করা।
৯১. গীবত করা।
৯২. অনুমতি ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশ করা।
৯৩. একই মজলিসে তৃতীয়জনকে রেখে দুজনে কানাকানি করা।
৯৪.মহিলাদের জন্য এমন পাতলা কাপড় পরিধান করা যা দ্বারা শরীর দেখা যায়।
৯৫. কৃত্তিম চুল ব্যবহার করা।
৯৬. শরীরে উল্কি বা ট্যাটু অঙ্কন করা।
৯৭. ঘরের দেয়াল কাপড় বা ক্যালেন্ডার ইত্যাদিতে জীবজন্তুর ফটো রাখা।
৯৮. মিথ্যা স্বপ্ন রচনা করা।
৯৯. নাম উল্লেখ করে অভিশাপ দেওয়া।
১০০. যেকোনো গুনাহকে ছোট মনে করা।
এছাড়াও আরো অনেক গুনাহ রয়েছে যেগুলো থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপরিহার্য। তাই আসুন, আমরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকি এবং অন্যদেরকেও বাঁচানোর চেষ্টা করি। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে তাওফিক দান করুন। আমীন!
লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া শায়খ আবদুল মোমিন, মোমেনশাহী
আপনার মতামত লিখুন :