ঢাকা : বাংলাদেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতের বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী যাচাই.কম লি.-এর চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ। তিনি বেসিস নির্বাচনে অ্যাফিলিয়েট ক্যাটাগরিতে পরিচালক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন উপলক্ষে তার ঘোষিত ইশতেহারে বেসিসের ভবিষ্যৎ রূপরেখা অংকন করে দিয়েছেন।
প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ বলেন, “বেসিস অ্যাফিলিয়েট ক্যাটাগরির সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো এবং বেসিসের জন্য নিজেকে একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে আগামী দুই বছর নিয়োজিত রাখতে চাই। আমি এবং আমার প্যানেল ‘টিম সাকসেস’ জয়ী হলে বেসিসের জন্য স্থায়ী এবং নিজস্ব অবকাঠামোতে বেসিস কার্যালয় স্থানান্তর করব।”
বেসিসের নিজস্ব তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়ে যাচাই ডট কমের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমার লক্ষ্য স্ট্রার্টআপ ফান্ডিং এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়ন বা ঋণের ব্যবস্থা করা। ২০৪১ সাল পর্যন্ত ট্যাক্স এক্সেম্পশনের সময় বাড়ানোর মতো মুখ্য বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করতে চাই।’
এ ছাড়া ই-কমার্স এবং মার্কেটপ্লেস ক্রসবর্ডার ও এবং লজিস্টিকস বিজনেস-বান্ধব নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করতে তিনি বদ্ধপরিকর বলে জানান।
আব্দুল আজিজ বলেন, ‘নতুন উদ্যোক্তাদের ওয়ার্ক অর্ডার বা কাজের অভিজ্ঞতা না থাকায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ পাওয়া বা অংশ নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই এমন নীতিমালা তৈরি করতে চাই যাতে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ন্যূনতম ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ কাজের যৌথ অংশীদার কোটা বরাদ্দ রাখা হয় এবং যৌথ কাজের অংশীদার হিসেবে নতুন উদ্যোক্তাদের সনদ প্রদানের সুযোগ তৈরি করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এগ্রোটেক, ফিনটেক, ইন্সুটেক, ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট এবং এডটেক, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং মিডিয়া, ফ্রিল্যান্সারদের পেমেন্ট সমস্যা সমাধান, সার্ভিস প্লাটফর্ম, OTA, মিউজিক, অনলাইন জব মার্কেটপ্লেস, অনলাইন স্টক মার্কেট, নতুন এজেন্সি এবং ট্রেডিং বিজনেস সহায়ক পলিসি তৈরি করার পরিকল্পনা আছে। তাদের যেকোনো ব্যবসায়িক সংকট দূরীকরণে আমাকে পাশে পাবে বলে কথা দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘অফলাইন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনলাইন বা ডিজিটাল কমার্স এ রূপান্তরের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করতে চাই এবং তাদের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে ভূমিকা রাখতে চাই।’
অ্যাফিলিয়েট ক্যাটাগরির এ পরিচালক পদপ্রার্থী বলেন, ‘বেসিস অ্যাফিলিয়েট ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আমার আলাদা কিছু করার ইচ্ছে আছে।’
তিনি বলেন, “আমি নির্বাচিত হলে ক্যাটাগরির বিজনেস পরিচালনার পথে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ‘হেল্প ডেস্ক’ স্থাপনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করতে চাই।”
অ্যাফিলিয়েট ক্যাটাগরির ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ব্যবসার প্রসারে ইকো-সিস্টেম তৈরিতে কাজ করার ঘোষণাও তিনি দেন। তিনি বলেন, ‘আমি এই উদ্যোক্তাদের চাওয়া এবং পাওয়ার কণ্ঠ হিসেবে কথা বলতে চাই এবং একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে শ্রদ্ধেয় সদস্যদের অ্যাডভোকেসি করতে চাই। সরকারি বিভিন্ন নীতিমালায় নতুন, ক্ষুদ্র দেশীয় উদ্যোগগুলোর স্বার্থরক্ষায় সদাসচেষ্ট থাকব।’
ডিজিটাল বিজনেসের ক্ষেত্রে ব্যবসার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার ও বিজনেস পরিচালনায় উদ্যোক্তারা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়। এ বিষয়ে আব্দুল আজিজ বলেন, “এ ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য অ্যাফিলিয়েট ক্যাটাগরির সদস্যদের জন্য আলাদা ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যেখানে ব্যবসার এন্ট্রি পয়েন্টকে সহজ করা তথা ট্রেড লাইসেন্স, ট্যাক্স, ভ্যাট, ট্রেড মার্ক, কপিরাইট, ডিবি আইডি ও বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন সেবা প্রদান করা হবে।”
বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আব্দুল আজিজ একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের কাজ শুরু করেন। পরে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু করেন।
নিজ উদ্যোগে স্কুল, কলেজ, টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, মেডিকেল ইনস্টিটিউট, ইউনিভার্সিটিসহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। নিজ প্যানেল টিম সাকসেসের সব প্রার্থীর জন্য বেসিস সদস্যদের ভোট চেয়েছেন তিনি।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :