ঢাকা: বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় ও বিশ্বাসযোগ্যতার বড় এক প্রতীক হলো ফেসবুকের ‘ব্লু টিক’ বা ভেরিফায়েড ব্যাজ। প্রোফাইল বা পেজের পাশে থাকা এই ছোট্ট নীল চিহ্নটি বোঝায় যে, এটি একটি অফিসিয়ালি যাচাইকৃত অ্যাকাউন্ট। ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড, মিডিয়া, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের কাছে এটি সম্মান ও স্বীকৃতির প্রতীক হয়ে উঠেছে।
তবে এই ব্লু টিক পেতে হলে কিছু নিয়মকানুন মানতে হয় এবং আবেদন করতে হয় নির্ধারিত প্রক্রিয়ায়।
ব্লু টিক আসলে কী?
ফেসবুকের ব্লু টিক হলো একটি অফিসিয়াল ভেরিফিকেশন ব্যাজ, যা অ্যাকাউন্ট বা পেজের প্রামাণিকতা নিশ্চিত করে। সাধারণত পাবলিক ফিগার, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, মিডিয়া প্রতিষ্ঠান, ব্র্যান্ড এবং প্রভাবশালী কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের এই ব্যাজ দেওয়া হয়।
এটি সাহায্য করে—
অনুসারীদের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি করতে
ভুয়া বা ক্লোন অ্যাকাউন্ট থেকে আলাদা হতে
ব্র্যান্ডিং ও অনলাইন উপস্থিতি শক্তিশালী করতে
কারা পেতে পারেন ব্লু টিক?
ফেসবুক সাধারণত নিচের বিভাগগুলোর জন্য ব্লু টিক অনুমোদন করে—
পাবলিক ফিগার (অভিনেতা, লেখক, খেলোয়াড়, সাংবাদিক)
সরকারি প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ও সংবাদমাধ্যম
এনজিও ও সামাজিক সংগঠন
ব্র্যান্ড বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
ইনফ্লুয়েন্সার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর
ভেরিফিকেশন পাওয়ার পূর্বশর্ত
১. আসল অ্যাকাউন্ট হতে হবে (Authenticity)
২. পূর্ণ তথ্যসহ প্রোফাইল বা পেজ থাকতে হবে
৩. নিয়মিত একটিভিটি ও অর্গানিক এনগেজমেন্ট থাকা জরুরি
৪. উল্লেখযোগ্যতা থাকতে হবে (মিডিয়া কাভারেজ বা গুগলে খোঁজ পাওয়া যায় এমন উপস্থিতি)
৫. টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু থাকতে হবে
ধাপে ধাপে আবেদন করার পদ্ধতি
১. লিংকে যান:
Facebook Verified Badge ফর্ম
২. অ্যাকাউন্ট টাইপ নির্বাচন করুন
প্রোফাইল বা পেজ যেটি ভেরিফাই করতে চান সেটি সিলেক্ট করুন
৩. পরিচয়পত্র আপলোড করুন
ব্যক্তিগত প্রোফাইল: NID, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান: TIN/VAT, লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন ডকুমেন্ট
৪. ক্যাটাগরি ও দেশ নির্বাচন করুন
যেমন: মিডিয়া, ব্যবসা, শিক্ষা, সরকার ইত্যাদি
কেন ভেরিফিকেশন চান তা ব্যাখ্যা করুন
সংক্ষেপে লিখুন আপনি কী করেন, আপনার পরিচিতি বা অনলাইন উপস্থিতি কেমন
প্রমাণ যোগ করুন, ওয়েবসাইট, নিউজ লিংক, ইউটিউব বা অন্যান্য সোর্সে আপনার উল্লেখ থাকলে তা দিন
আবেদন সাবমিট করুন এবং অপেক্ষা করুন। রিভিউ হতে ৭–৩০ দিন লাগতে পারে।
যেসব কারণে আবেদন বাতিল হতে পারে
ভুয়া বা অসম্পূর্ণ তথ্য
নতুন বা কম সক্রিয় অ্যাকাউন্ট
অনলাইন উল্লেখযোগ্যতা না থাকা
নিরাপত্তা সেটিংস না থাকলে
ব্লু টিক পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে যা করবেন: প্রোফাইল ও নাম পরিচিতিমূলক রাখুন,
নিয়মিত মানসম্মত কনটেন্ট দিন,ফলোয়ার ও এনগেজমেন্ট বাড়ান, আপনার নাম সংবাদমাধ্যমে থাকলে সেই লিংক দিন, ইনস্টাগ্রাম/টুইটারেও একই নামে ভেরিফাই করুন, ব্লু টিক পেলে যেসব সুবিধা মিলবে, বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে, ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে নিরাপত্তা, কনটেন্ট ও বিজ্ঞাপনে গুরুত্ব বাড়বে, গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে, ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং সহজ হবে।
ফেসবুকের ব্লু টিক শুধু একটি চিহ্ন নয়, এটি অনলাইন পরিচিতির একটি স্বীকৃতি। আপনি যদি নিয়মিত সক্রিয় থাকেন, উল্লেখযোগ্য অনলাইন উপস্থিতি থাকে এবং যথাযথ তথ্য প্রদান করেন, তবে ব্লু টিক পাওয়া সম্ভব।
সততা, ধৈর্য আর প্রমাণ এই তিনটিই ব্লু টিক পাওয়ার মূল চাবিকাঠি।
ইউআর
আপনার মতামত লিখুন :