জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০১৭, ১২:০৩ পিএম
জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই

ঢাকা : মহান একুশের বইমেলা ঘিরে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই। গোয়েন্দারা এ ধরনের কোনো আভাস এখনো পাননি। তারপরও এবারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গতবারের চেয়ে আরো এক ধাপ জোরদার করা হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তায় র‌্যাব-পুলিশের প্রায় আড়াই হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন থাকবেন। ডিজিটাল প্রযুক্তি ও অ্যানালগ পদ্ধতির সমন্বয়ের মাধ্যমে একুশের বইমেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। 

এছাড়া সাদা পোশাকেও গোয়েন্দা সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য সার্বক্ষণিকভাবে মেলায় কঠোর নজরদারি চালাবে। বাংলা একাডেমির ভেতরে ও বাইরে অর্ধশত ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। শাহবাগ থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত সড়কেও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে বলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে। ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বইমেলার নিরাপত্তার ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান একুশের বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বলেন, একুশের বইমেলা সামনে রেখে পুরো রমনা এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা গত বছরের চেয়েও জোরদার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলার উদ্বোধন করবেন। এ কারণে ইতিমধ্যেই বাংলা একাডেমি ঘিরে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। রাত থেকে টিএসসি-দোয়েল চত্বর ও আশপাশের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে। প্রতিটি সড়কে পুলিশের টহল জোরদার করা হবে। 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ বইমেলা উপলক্ষে একাডেমির ভেতরে সিসিটিভি স্থাপন করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও ভেতরে, সামনের সড়ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রায় অর্ধশত সিসিটিভি স্থাপন করা হবে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যেই এই কাজ শেষ হবে। সিসিটিভি মনিটরিংয়ের জন্য একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হবে। সেখান থেকেই ক্যামেরাগুলো মনিটরিং করা হবে। ডিজিটাল ও অ্যানালগ উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সব ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে। প্রবেশপথে প্রত্যেককে নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হবে। ব্যাগ নিয়ে কোনো দর্শনার্থীকে মেলায় ঢুকতে দেয়া হবে না। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কঠোর নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হবে। র‌্যাব ও পুলিশের পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য প্রবেশপথগুলোতে উপস্থিত থাকবেন। 

বইমেলায় স্টলগুলোতে বই ঢোকানোর সময়ও নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হবে। বইয়ের আড়ালে নাশকতামূলক কোনো মালামাল যেন না নিতে পারে কেউ সেদিকে কঠোরভাবে লক্ষ রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একুশের বইমেলা সামনে রেখে কোনো ধরনের জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই। তারপরেও পুলিশ ও গোয়েন্দারা সতর্ক রয়েছেন। নিরাপত্তায় গোয়েন্দা পুলিশ ও র‌্যাবের বোমা ডিসপোজেবল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত রাখা হবে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নিরাপত্তার কারণে শাহবাগ থেকে টিএসসির দিকে যাওয়ার সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে। দোয়েল চত্বর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন এলাকা থেকেও কোনো যানবাহন ঢুকতে দেয়া হবে না। টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত সড়কে কোনো দোকান বসতে দেয়া হবে না। হকারদের ব্যাপারেও রাস্তায় জটলা বা আড্ডা দেখলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। এই রাস্তায় বইমেলায় আগতদের নিরবচ্ছিন্ন চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ জন্য টিএসসি এলাকাতেও পুলিশের একটি চেকপোস্ট বসানো হবে।  

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বইমেলা চলাকালে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ বিভাগকে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া বাংলা একাডেমি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি, তিন নেতার মাজার ও দোয়েল চত্বর এলাকা ঘিরে পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থা নেয়া ও পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা নিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকেও অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বইমেলার নিরাপত্তার ব্যাপারে আজকালের মধ্যেই একটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা, বাংলা একাডেমি, বিদ্যুৎ বিভাগ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এই সভায় উপস্থিত থাকবেন।  

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Link copied!