১৯৭৯ বিশ্বকাপে এই শট আবিষ্কার করেছিলেন ভিভ রিচার্ডস

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৫, ২০১৯, ১০:২৪ এএম
১৯৭৯ বিশ্বকাপে এই শট আবিষ্কার করেছিলেন ভিভ রিচার্ডস

ঢাকা: ক্রিকেটের মক্কা লর্ডসে ১৯৭৯ (দ্বিতীয়) বিশ্বকাপের জমাটি ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও তখনকার সময়ের  প্রবল পরাশক্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বে সেদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে ক্যারিবীয়রা।

ইংলিশ পেসারদের  তোপের মুখে ৯৯ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যে চার ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন, তারা কে ছিলেন শুনলে অবাকই হবেন-গর্ডন গ্রিনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স, আলভিন কালিচরন ও অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড।

ইংলিশ পেসারদের দৌড় ওই পর্যন্তই। এরপর বাকি ইতিহাস রচনা করেছেন স্যার ভিভ রিচার্ডস। খেলেছেন ১৫৭ বলে অপরাজিত ১৩৮ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস। ১১টি বাউন্ডারি আর তিন ছক্কায় সাজানো এই ইনিংসের কাছেই পরাজয় বরণ করতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে।

কলিস কিং আর ভিভ রিচার্ডস গড়েন ১৩৯ রানের জুটি। কিং ৮৬ রানে ফিরলেও নিজের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তরীকেও টেনেছেন ভিভ। যা গিয়ে ঠিকই থেমেছে বিজয়ের বন্দরে। তবে ভিভের এই ইনিংসের চেয়েও যেটা বিখ্যাত হয়ে আছে সেটা হলো ইংলিশ পেসার মাইক  হেন্ডরিখের শেষ বলে ‘ফ্লিক’ শটে মারা সেই ছক্কাটি। হেন্ডরিখ এর আগে ১১ ওভারে (তখন খেলা ছিল ৬০ ওভারের এবং একজন বোলার বল করার সুযোগ পেতেন ১২ ওভার) রান দিয়েছিলেন মাত্র ৩৬।

তখন ভিভ ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান কলিন ক্রফট নন স্ট্রাইক প্রান্তে। বোলার মাইক হেন্ডরিখ। প্রথম ৫ বলে ৮ রান নিলেন রিচার্ডস। এবার এল ইনিংসের শেষ বল করার পালা। ফিল্ডিং সাজানো নিয়ে তখন কোনও ধরা-বাধা নিয়ম ছিল না। এ কারণে ইংলিশ অধিনায়ক মাইক  ব্রেয়ারলি প্রায় সব ফিল্ডারকেই ছড়িয়ে দিলেন একেবারে লাইন বরাবর।

শেষ বল করতে দৌড় দিলেন হেন্ডরিখ। বল করলেন। ভিভ ফ্লিক করে বলটিকে সোজা ফিল্ডারদের মাথার ওপর দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন মাঠের বাইরে। পরে তিনি এই শট নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি দেখলাম লং অফ এবং লং অন দিয়ে ফাঁকা রয়েছে। এরপরও যদি বলটিকে এক কিংবা দুই রানের জন্য ছেড়ে দেই তাহলে সেটা হবে বোকামি।’ রিচার্ডস যোগ করেন, ‘হেন্ডরিখের বলটি ছিল সঠিক। ফুল লেংথের। তবে অফ স্ট্যাম্পের একটু বাইরে। এ কারণে অফ সাইডে এক পা এগিয়ে গিয়ে আমি ফ্লিক করি। কারণ আমি চিন্তা করেছি, বলটি অবশ্যই এতে মাঠের বাইরে যাবে। সুতরাং এখন বলতে পারি ‘ফ্লিক’ শটটির উদ্ভাবক আমিই।’

ভিভ রিচার্ডসের এই শট নিয়ে পত্রিকার পাতায় এরপর কত গল্পগাঁথা রচিত হয়েছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রেখেছে তার সেই শটটির কথা। বিখ্যাত ধারাভাষ্যকার এবং ক্রিকেট লেখিয়ে টনি  কোজিয়ার বলেছেন, ‘ইংলিশ বোলারদের এমনভাবে শাসন করেছেন রিচার্ডস, দেখে মনে হয়েছিল  যেন তারা  কোন নেট বোলার।’
ক্লাইভ লয়েড পর্যন্ত বলেছিলেন, ‘খুব নাটকীয়ভাবেই ইনিংসের পরিসমাপ্তি  টেনেছিলেন ভিভ।’ কিং-রিচার্ডসের জুটি ইংল্যান্ডের সামনে ৯ উইকেটে ২৮৬ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। কিন্তু  শেষ পর্যন্ত ইংলিশরা অলআউট ১৯৪ রানে।  ৯২ রানে হেরে ঘরের মাঠে শিরোপা বিসর্জন দিল ইংল্যান্ড।


সোনালীনিউজ/আরআইবি/আকন

Link copied!