• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

গাংনীতে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ঘরে থাকছে অন্যরা, সংশ্লিষ্টরা নিরব  


মেহেরপুর প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২, ০৯:৪১ এএম
গাংনীতে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ঘরে থাকছে অন্যরা, সংশ্লিষ্টরা নিরব  

মেহেরপুর : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় হতদরিদ্র অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য সরকারীভাবে আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ করে তাদের বসবাসের জন্য একটা ঠিকানা করে দেয়া হয়েছে। সেখানে উপকারভোগী গরীব অসহায় পরিবার বসবাস করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দেখা গেছে, নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পের গৃহে উপকারভোগীরা বসবাস না করে বাস করছে অন্যরা। তাহলে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর আসলে কাদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে! এমন প্রশ্নের কোন সদোত্তর মিলছে না। 

স্থানীয়দের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের আওতাধীন জোড়পুকুরিয়া-ষোলটাকা সড়কের পার্শ্বে আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭ টি ঘর পাশাপাশি নির্মিত হয়েছে। উপজেলা ভূমি অফিস কর্তৃক বন্দোবস্তকৃত খাসজমির উপর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের বাস্তবায়নে ঘরগুলি নির্মান করা হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বর কর্তৃক যাচাই বাছাই শেষে প্রকৃত গরীব অসহায় গৃহহীনদের জন্য ঘরগুলি নির্মান করা হলেও উপকারভোগীরা তাদের জন্য বরাদ্দকৃত ঘরে বসবাস না করে অন্য কাউকে বসবাসের সুযোগ করে দিয়েছে। এমন অভিযোগ উঠেছে জোড়পুকুরিয়া বাজারের অদূরে নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পে। ৭ টি ঘর নির্মিত হলেও বসবাস করছে মাত্র ৩ টি পরিবার। বাকী ৪ টি পরিবারের লোকজন কেউ থাকেন না। 

বসবাসকারীদের নিকট থেকে জানা গেছে, প্রকল্পের ৭ নং ঘরটি বরাদ্দ দেয়া হয় ভরাট গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী (আধাপাগল) অসহায় শামীম রেজার পরিবারকে। শামীম রেজা বরাদ্দকৃত ঘরে বসবাস করতে চাইলেও তার স্ত্রী সেখানে থাকবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। সে কারনে শামীম রেজা ঘরে না থেকে অন্য একজন আনোয়ার হোসেন নামে একজন রাজমিস্ত্রী তা পরিবারকে নিয়ে থাকার অনুমতি দিয়েছে। একইভাবে ৬ নং ঘরটি তেরাইল গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন নামের একজনকে বরাদ্দ দেয়া হলেও তিনি তার গ্রামে বাড়ি ঘর থাকায় সে তার নিকটাত্মীয় লাভলু নামের একজন হোটেল ব্যবসায়ীকে  থাকার অনুমতি দিয়েছে। এব্যাপারে লাভলু জানায় জাহাঙ্গীর আমার চাচাতো ভাই। সে তার ছোট শিশুকে নিয়ে এখানে থাকবে না বলে আমাকে থাকতে বলেছে। 

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বসবাসকারীরা স্বীকার না করলেও তারা নাকি ভাড়া দিয়ে সেখানে বসবাস করে। এমনি ভাবে তেরাইল গ্রামের সাবিনা খাতুন (৫ নং ঘর) ও বালিয়াঘাট গ্রামের ফরিদা খাতুন (৪ নং ঘর) নির্মিত ঘরে না থেকে নিজ নিজ গ্রামে অবস্থান করে। ঐ ঘর দুটি তালাবদ্ধ পড়ে থাকে। এমনিভাবে উপজেলার সবকয়টি ইউনিয়নে এরকম ঘর নির্মিত হয়েছে। যেখানে উপকারভোগীরা আজও সেখানে বসবাস করেনা। অথচ প্রকৃত গৃহহীনরা ঘর না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। 

এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ওবাইদুর রহমান কমলের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, অভিযোগটি আমি শুনেছি। আমার মেয়াদের আগের চেয়ারম্যান এইভাবে যাচাই বাছাই না করে গৃহ  বরাদ্দ দিয়েছে। আমি  আমার মেম্বরদের সাথে নিয়ে আশ্রয়ন প্রকল্পটি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
 
এনিয়ে বিস্তারিত জানতে উপজেলা ভূমি অফিস ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, এমন অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই।ঘটনা প্রমাণিত হলে বরাদ্দকৃতদের নাম কর্তন করে প্রকৃত ভুমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে বরাদ্দ দেয়া হবে। 

এব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম জানান, এরকম অভিযোগ আমি স্থানীয়দের নিকট থেকে পাইনি।এই প্রকল্প গুলো আগে নেয়া হয়েছিল। হয়তো যাচাই বাছইয়ে কিছুটা অনিয়ম হয়েছিল।তাই প্রকৃত গৃহহীনদের ঘর দেয়া হয়নি।বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।            

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!