পঞ্চগড় : পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকে। তাই মা রিমু আক্তার পরিবারের কাছ থেকে দূরে রাখতে চেয়েছিলেন তার সদ্য জন্ম নেওয়া কন্যা শিশুকে। অনেকের কাছে মেয়েকে দত্তক দেওয়ার চেষ্টাও করেছেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের লীলা! কেউই তার কন্যা শিশুকে দত্তক নেয়নি।
শেষ পর্যন্ত আর কোনো উপায় না দেখে রিমু আক্তার এমন এক কাজ করেন যা শোনে যে কেউই চমকে যাবেন। গত বৃহস্পতিবার মেয়েটিকে সাজিয়ে-গুছিয়ে একটি বাসার ফটকের সামনে ফেলে রেখে চলে যান তিনি। আর এমন কাজ করার পেছনে মা রিমু আক্তারের উদ্দেশ্য ছিল- তার কন্যা শিশুটি যেন কোনো ধনী পরিবারের সন্তান হিসেবে বড় হয়। আর নিজের পরিবারে নিত্য লেগে থাকা অশান্তি যেন চোখে দেখতে না হয় তার কন্যাকে। পঞ্চগড়ে এই ঘটনা ঘটেছে।
নবজাতকটিকে ফেলে রেখে আসার পর পঞ্চগড়ের কামাতপাড়া এলাকা থেকে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। তিন দিন ধরে খোঁজ চালানোর পর অবশেষে পুলিশ সোমবার (২১ অক্টোবর) মা রিমু আক্তারের সন্ধান পায়। ওইদিন দুপুরে রিমু আক্তারকে হাজির করা হয় পঞ্চগড় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। সেখান থেকে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরবর্তীতে ওইদিন বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ডেকে আনা হয় রিমুর মা শিল্পী বেগম ও বাবা আইবুল ইসলামকে। তারা সদর উপজেলার ভীতরগড় এলাকার বাসিন্দা। তাদের মাধ্যমে রিমুর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয় প্রশাসন।
এরপর সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে পুলিশি হেফাজতে রিমুকে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালের শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মেয়েকে বুকের দুধ খাওয়ান তিনি।
পরবর্তীতে কেন নিজের মেয়েকে ফেলে রেখে গেছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে রিমু যেসব কথা বলছেন সেগুলো রীতিমতো চমকে ওঠার মতো। তিনি জানান, পারিবারিক যন্ত্রণা আর অশান্তি থেকে রেহাই পেতে মেয়েটিকে ফেলে রেখে গিয়েছিলাম। চেয়েছিলাম আমার মেয়ে কোনো ধনী পরিবারে বড় হোক। তাই একজন বড়লোকের বাড়ির সামনে ফেলে রেখে গিয়েছিলাম তাকে। জবানবন্দিতে ফেলে রেখে যাওয়ার সময় মেয়েটির বয়স ১২ দিন ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অবশ্য এখনই নবজাতকটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক কর্তৃপক্ষ। তাদের চাওয়া সে আরও কিছুদিন হাসপাতালের শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রেই থাকুক।
সোনালীনিউজ/এএস
আপনার মতামত লিখুন :