নারায়ণগঞ্জ: ফলন হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, ফলন আগের তুলনায় দ্বিগুণ। কিছু লিচু খরায় ঝরে গেলেও উৎপাদন ভালো। বাগানিরা জানান, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে রপ্তানি হচ্ছে সোনারগাঁয়ের লিচু।
পাইকাররা আগেই লিচু কিনে নিচ্ছেন। প্রতি হাজার লিচু ৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনারগাঁয়ের লিচু দেশের বাজারে আগে ওঠে। কদমি লিচুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, গত বছর এখানে অর্ধশতাধিক গ্রামে ১০০ হেক্টর জমিতে ৬৫০টি লিচুবাগান গড়ে উঠেছিল। আকারে ছোট হলেও এখানকার কদমি, মোজাফফরপুরী, পাতি, চায়না-থ্রি, এলাচি ও বোম্বাই জাতের লিচুর কদর সবচেয়ে বেশি।
সে বছর লিচু চাষিরা পাইকারি দরে ৬ কোটিরও বেশি টাকার লিচু বিক্রি করেছিলেন। এ বছর উপজেলায় ১০৭ হেক্টর জমিতে ৬৬৬টি বাগানে লিচুর ফলন হয়েছে। এসব বাগানের লিচু পাইকারি দরে ৮ কোটিরও বেশি টাকায় বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন বাগানিরা।
আরও জানা গেছে, এ অঞ্চলে লিচুর চাষ শুরু হয় বহু বছর আগে। পর্তুগিজদের আগমণের পর তারাই প্রথম এ অঞ্চলে লিচুর চাষ শুরু করেন। নব্বইয়ের দশকে এখানে দেশের বৃহৎ লিচু চাষ হলেও তা কয়েক বছরের মধ্যে কমে আসে। তবে প্রায় এক যুগ ধরে এখানকার বাগানিরা বাজারে লিচুর কদর পেয়ে নতুন নতুন বাগানে ফলন করে চলেছেন।
শুরুর দিকে পানাম ও আদমপুরে লিচু চাষ হলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে ষোল্লপাড়া, দরপত, সনমান্দী, গোয়ালদী, বৈদ্যেরবাজার, ভট্টপুর, গাবতলী, হাড়িয়া, অর্জুন্দী, দুলালপুর, গোবিন্দপুর, কৃষ্ণপুরা, বাগমুছা, হাতকোপা, দত্তপাড়া, আদমপুর, খাগুটিয়া, খাসনগর দীঘিরপাড়, চিলারবাগ, দৈলরবাগ, টিপরদী, হরিশপুর, তাজপুর, সাদীপুর, ইছাপাড়া, বারদী, সেনপাড়া, বালুয়াদীঘির পাড়, মোগরাপাড়া, বাড়িচিনিসহ বিভিন্ন গ্রামে।
জানা গেছে, সোনারগাঁয়ের কদমি লিচুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এই লিচু আকারে ছোট হলেও রং টকটকে লাল। প্রতি বছর এখানকার লিচু দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। লিচুর ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই এখানে লিচু চাষ বাড়ছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। যেটা আগের তুলনায় দ্বিগুণ। এখন বাগানিদের অপেক্ষা শুধু বাজারজাতকরণের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক জানান, ‘এ বছর সোনারগাঁয়ে ১০৭ হেক্টর জমিতে প্রায় ৭২০ টন লিচুর উৎপাদনের লক্ষ্যে বাগান করেছেন চাষিরা। ছোট-বড় মিলে এখানে ৬৬৬টি লিচুবাগান রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন বাগান পরিদর্শন করে দেখেছি লিচুর ফলন খুবই ভালো হয়েছে। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে কিছু লিচু গাছ থেকে ঝরে পড়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে।’
এআর
আপনার মতামত লিখুন :