বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার যদি জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে চায়, তবে ‘জুলাই সনদ’কে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। অন্যথায় আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে একটি ফ্যাসিবাদী আমলের নির্বাচন।’
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় সিলেট নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামী বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ’ পাঁচ দফা দাবিতে এই কর্মসূচি আয়োজন করে সিলেট মহানগর জামায়াত।
ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘৫ আগস্ট সরকারের ঘোষণাপত্রে ‘জুলাই সনদ’ উল্লেখ থাকলেও তা বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক নয়। বরং একটি বিশেষ গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নেই বেশি মনোযোগী। ঘোষণাপত্রে শাপলা চত্বরের গণহত্যা, পিলখানায় সেনা হত্যাকাণ্ড বা গুম-খুনের বিষয়গুলো উপেক্ষিত হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলা হলেও তারা সেই প্রতিশ্রুতির প্রতি দায়বদ্ধ থাকছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কারের নামে ১১টি কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছিল, পরে তা নেমে এসেছে ৬টিতে। বহু বৈঠক হলেও সংস্কারে কোনো অগ্রগতি নেই। বরং একটি নির্দিষ্ট দলের হস্তক্ষেপের কারণে সংস্কার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. আজাদ বলেন, ‘যারা জুলাই চেতনা অস্বীকার করে এবং সংস্কারে বাধা দেয়, তারা প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। তারা পিআর পদ্ধতি মানে না, সংস্কারও চায় না—তাহলে তারা কোন ভিত্তিতে নির্বাচন করতে চায়? অতীতে শেখ হাসিনার আমলে দেখা গেছে দিনের ভোট রাতে দেওয়া, ২০১৪ সালের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের মতো ‘ডামি নির্বাচন’। এসব আর চলবে না। জনগণ এসব প্রত্যাখ্যান করেছে। জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের কবর রচিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হতে হবে সংস্কারকৃত আইন ও পিআর পদ্ধতির ভিত্তিতে। পুরনো পদ্ধতির নির্বাচন বাতিল করতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমাদের আন্দোলন। যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন—তাদের রক্তের প্রতিদান দিতে হবে। দুর্নীতিবাজদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
ড. আজাদ আরও দাবি করেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা নির্বাচন, যেখানে জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।’
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, মহানগর নায়েবে আমীর ড. নূরুল ইসলাম বাবুল, সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
আপনার মতামত লিখুন :