ঠাকুরগাঁওয়ে নিখোঁজ তিন মাদরাসা ছাত্রী, ৪৮ দিনেও মেলেনি সন্ধান 

  • ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম
ঠাকুরগাঁওয়ে নিখোঁজ তিন মাদরাসা ছাত্রী, ৪৮ দিনেও মেলেনি সন্ধান 

ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ে তিনজন মাদরাসা ছাত্রীর নিখোঁজের রহস্য ৪৮ দিন পেরিয়েও উদঘাটিত হয়নি। নিখোঁজের দিন রাতেই তারা শহরের রোড এলাকার এক আবাসিক হোটেলে উঠেছিল, কিন্তু ভোরের আগেই হোটেল ত্যাগ করে অদৃশ্য হয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। ৯ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করা হয়েছিল।

নিখোঁজ ছাত্রীরা হলেন- দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মুরারিপূর গ্রামের জুঁই (১৪), একই উপজেলার গণকপয়েনরের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস তামান্না (১৬) এবং ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গোবিন্দ নগর এলাকার আয়শা সিদ্দিকা (১৩)। তারা সালন্দর মাদরাসা পাড়া এলাকার ‘আয়শা সিদ্দিকা’ বালীকা মাদরাসার ছাত্রী।

মাদরাসা সূত্রে জানা গেছে, ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় শেষবারের মতো মাদরাসায় দেখা যায় তিনজনকে। ভোর ৫টার সময় রুমে ডাকতে গেলে তাদের আর পাওয়া যায়নি। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ধারণা করেন, তারা পালিয়েছে।

শহরের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাত ১টার সময় তিনজন রিকশা করে বাসস্ট্যান্ডে গিয়েছিলেন। এরপর রিকশা বদল করে রেলস্টেশনে যান, তবে কোনো ট্রেন না পেয়ে ভোর ৪টা পর্যন্ত হোটেলে অবস্থান করেন। পরে হোটেল ম্যানেজারের সহায়তায় রিকশা নিয়ে রোড অটোস্ট্যান্ডে ফিরে যান এবং ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর আর কোনো খোঁজ মেলেনি।

হোটেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান ইমন বলেন, রাত ২টার দিকে তিনজন এসে হোটেলে কিছুক্ষণ থাকবেন বলেছিলেন, এরপর ভোরে বেরিয়ে যান। তবে হোটেল রেজিস্ট্রার খাতায় তাদের নাম ঠিকানা লিপিবদ্ধ করা হয়নি।

নিখোঁজদের পরিবার অভিযোগ করেছেন, তারা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন, কিন্তু কোনো সান্ত্বনা বা নিশ্চিত তথ্য পাচ্ছেন না। নিখোঁজ তামান্নার মা আখলিমা বেগম বলেন, মাদরাসায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। বারান্দায় কোনো গ্রিল না থাকায় সহজেই বাইরে যেতে পারছিল।

নিখোঁজ আয়শার বোন জানান, মাদরাসায় নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মারধর করা হতো। তার আগে তারা এই নির্যাতনের কথা জানিয়েছিল। মাদরাসা কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত নির্যাতনের কারণে তিন মেয়ে পালিয়ে গেছে বলে পরিবার মনে করছে।

মাদরাসার প্রধান শিক্ষিকা হামিদা বেগম অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, “আমরা তাদের খুঁজছি। নির্যাতনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীর বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, “পুলিশ ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। আশা করছি দ্রুত তারা পরিবারের কাছে ফিরবে।”

এসএইচ

Link copied!