প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডিকে যা জানালো পর্নো দম্পতি

ঢাকা: দেশে অবস্থান করেই আন্তর্জাতিক পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যতম শীর্ষস্থানে থাকা সেই আলোচিত যুগলকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। সংস্থাটির এলআইসি এবং সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিট আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৩টায় বান্দরবান জেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার বিকালে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা  হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও বৃষ্টি (২৮)। আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামে আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়ায়। বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।  

 
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডির গণমাধ্যম শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, শুধু নিজেরাই পর্ন ভিডিও তৈরি করা নয় বরং আরও মানুষদেরকে এ জগতে সম্পৃক্ত করার মতো বেআইনি কর্মকাণ্ডের অভিযোগও রয়েছে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই যুগল পর্ন-তারকা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব তথ্যেই উঠে আসে, গ্রেপ্তার মুহাম্মদ আজিম ও বৃষ্টি মাত্র এক বছরেই পর্নতারকাদের আন্তর্জাতিক পারফর্মার র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে এবং ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী পারফর্মারদের মধ্যে তাদের অবস্থান অষ্টম।   

২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তাদের প্রথম ভিডিও প্রকাশ হয়।  পরবর্তীতে এক বছরে তাদের প্রকাশিত মোট ১১২টি ভিডিও দুই কোটি ৬৭ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে। 

তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, একাধিক আন্তর্জাতিক পর্ন ওয়েবসাইটে তারা ভিডিও আপলোড করতেন। এভাবে খোলাখুলি প্রচারণার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রাম, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেও তারা প্রচারণা চালাতো। এসব প্রচারণায় ইন্ডাস্ট্রিতে যুক্ত হওয়ার জন্য অন্যদেরকে প্রলুব্ধ করে বিভিন্ন বার্তা প্রকাশ করতো তারা। আগ্রহীরা নতুন ক্রিয়েটর হওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে টেলিগ্রামের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে নতুনদেরকে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করাও ছিল তাদের কাজ। যেমন: টেলিগ্রাম চ্যানেলে নতুন ক্রিয়েটর এড করলে নগদ টাকা দেওয়া হবে বলে তারা বিজ্ঞাপন দিতো। 

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না পারা এ যুগল দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এলেও অনলাইনে রয়েছে তাদের বিলাসবহুল জীবনধারার বহু ছবি। বিষয়টি সামাজিক ও নৈতিকভাবে উদ্বেগজনক এবং একইসঙ্গে বেআইনি হওয়ায় সিআইডির এলআইসি এবং সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিট দ্রুততার সঙ্গে এই পর্ন-তারকা যুগলকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল, সিমকার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ পর্ন ভিডিও তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। 

গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলাসহ তাদেরকে রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

এসএইচ