বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য ২০১০ সালের ২৫ মার্চ যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কার সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময় ফাঁসিও হয় ৬ জনের। আজ সেই একই ট্রাইব্যুনালেই ঘোষিত হতে যাচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়—জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এবং শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর কাসেম আলী।
এ ছাড়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড পরে আপিলে আমৃত্যু কারাদণ্ডে পর্যবসিত হয় এবং জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমকে ৯০ বছরের সাজা দেওয়া হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হন, যা পরবর্তীতে আপিল বিভাগেও বহাল থাকে এবং দণ্ড কার্যকর হয়। জিয়াউর রহমান সরকারের মন্ত্রী আবদুল আলীম কারাগারেই মৃত্যুবরণ করেন।
২০২৩ সালের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গণহত্যা, হত্যাচেষ্টা, ষড়যন্ত্র, নির্যাতন এবং উসকানিসহ বিভিন্ন অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় আজ ঘোষণা করা হবে। এটি গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী ঘটনাবলির প্রথম কোনো মামলার রায়, যা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করছে।
সেই একই ভবন, একই ট্রাইব্যুনাল—কেবল দৃশ্যপট বদলে গেছে। একসময় যে ট্রাইব্যুনাল থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে যুদ্ধাপরাধের রায় দেওয়া হয়েছিল, আজ সেই ট্রাইব্যুনালই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিচারিক সিদ্ধান্ত দিতে যাচ্ছে।
এ ছাড়া শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার কয়েকজন সাবেক সদস্য ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধেও একই ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে—যা চলমান রাজনৈতিক ও বিচারিক প্রক্রিয়াকে আরও প্রভাবিত করছে।
এম
আপনার মতামত লিখুন :