যেভাবে উদ্ধার হলেন নাহিদ-হাসনাত-সারজিসরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক:  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৫, ০৯:০৫ পিএম
যেভাবে উদ্ধার হলেন নাহিদ-হাসনাত-সারজিসরা

ঢাকা : গোপালগঞ্জে সমাবেশ করতে গিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের হামলার শিকার হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর নাহিদ-হাসনাত-সারজিসদের সেনাবাহিনীর একটি টিম এপিসিতে উদ্ধার করে নিয়ে যান।

বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে এনসিপির শীর্ষ নেতাদের উদ্ধারের ঘটনাক্রম তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন দলটির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, গোপালগঞ্জ থেকে এপিসিতে ওঠানোর দায় আমিসহ কয়েকজনের। আর্মি যখন আমাদের উদ্ধার করতে আসে তখন বাইরে চলছে গুলি ও ককটেল হামলা। আর্মির সাফ কথা, তারা ফেস বাই ফেস সবাইকে এপিসিতে করে নেবে। তাদের অর্ডার। অন্যদিকে নাহিদ ও হাসনাত জানিয়ে দেন- সবাই একত্রে যাবো এবং গাড়িতে। এগুলো নিয়ে প্রায় আধাঘণ্টা দেনদরবার চলে। এরপর সবাই নিচে নামি।

আরিফুর রহমান তুহিন লিখেন, তখন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও সামরিক কর্মকর্তা আমাকে জানান (যেহেতু আমিসহ কয়েকজন তাদের সঙ্গে কমিউনিকেশন রাখছিলাম) শীর্ষ নেতারা জাতীয় সম্পদ, সেহেতু অন্তত ওনাদের এপিসিতে দেন। এ নিয়ে নিচেও অনেকক্ষণ ঝামেলা হয় এবং আমি ও ওয়াহিদ এক প্রকার জোর করে ওনাদের এপিসিতে তুলে দেই। সেখান থেকে আবারও নাহিদ ও হাসনাত নেমে যান। সুঠাম দেহের হাসনাত ও নাহিদকে দ্বিতীয়বার ধস্তাধস্তি করেই এপিসিতে ওঠাই।

এনসিপির এ নেতা লিখেন, বহর বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নাহিদ যে গাড়িটায় করে আসছিলেন ওইটাকে লক্ষ্য করে ককটেল, গুলি ও ইট-পাটকেল মারে। এতে অনেকগুলো গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায় এবং অনেকে আহত হন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যও আহত হন।

তিনি আরও লিখেন, গোপালগঞ্জ শহর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওনারা নেমে আবার যার যার গাড়িতে ওঠেন। ততক্ষণে গুলি করা কমেছে। তবে ইটপাটকেল অব্যাহত ছিল। আমাদের বহরের একটা গাড়িতে গুলি লাগে এবং চাকা পাংচার হয়ে যায়। দুইটি গাড়ি ঝাঁঝরা হয়ে যায়। প্রশাসনের ব্যাকআপ নিয়ে আর কিছু বললাম না। তারা মনে হয় শুরুতে চাইছিল হাসনাতরা মরে যাক। অনেকেই দেখছি হাসিনার হামলাকে ছাপিয়ে এই এপিসিতে ওঠাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। কয়েক হাজার অস্ত্রধারীর সঙ্গে আমরা ৪টা ঘণ্টা টিকে ছিলাম সেটা আপনাদের চোখে পড়লো না। এটা সত্যিই দুঃখজনক।

আরিফুর রহমান তুহিন লিখেন, ‘আমার নেতাদের কাছে যেমন আমাদের জীবন গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের কাছেও তাদের জীবন আমাদের জীবনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আপনাদের নেতাদের মতো উন্নতমানের গাড়ি ও দুই ডজন সিকিউরিটি ফোর্স নিয়ে ঘুরি না। আমাদের নেতারা বহরে হায়েস, নোয়াহ গাড়িতে আমাদের সঙ্গে চড়েন। যেগুলোতে সামান্য ইট পড়লেও কাচ ভেঙে যায়।’

এনসিপির এ নেতা অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীদের মূল লক্ষ্য ছিল নাহিদ-আখতার-হাসনাতরা, এটা তো সহজেই অনুমেয়। সুতরাং আমরা আমাদের নেতাদের জীবন বাঁচাতে যা দরকার সেটা করেছি। আপনারা একটা সন্ত্রাসী বাহিনীকে ছাপিয়ে এপিসি নিয়ে পড়ে থাকবেন জানলে সবাই ওইখানেই মরে যেতাম।

পিএস

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Link copied!