বেড়াতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতার কাছে হেনস্তার শিকার সাংবাদিক 

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২৪, ১০:৫৯ এএম
বেড়াতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতার কাছে হেনস্তার শিকার সাংবাদিক 

ঢাকা: কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের মোল্লাবাজার গুদারঘাট এলাকায় ঘুরতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতার হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন সময় টিভির সাবেক সিনিয়র সাংবাদিক ও এখন টিভির সাবেক যুগ্ম বার্তা সম্পাদক মিজানুর রহমান খবির। 

গত বুধবার (২১ মে) গুদারাঘাটে ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে ঘুরতে গিয়ে ঘাটের দৃশ্য ভিডিও করার সময় কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দীন নিরব ও সহযোগীদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হন তিনি।

সাংবাদিক মিজানুর রহামান খবির জানান, আমি ও মডেল অভিনেতা তানভির নদীর পাড়ে ঘুরতে যাই, এসময় ফেরি সদৃশ ছোট ট্রলার দেখে কৌতূহলবশত ভিডিও করি, আমার দীর্ঘদিনের সাংবাদিক অভিজ্ঞতায় এটুকু জানি কোথায় ভিডিও করা যাবে আর কোথা করা যাবে না, আর আমার ভিডিও দেখলে দেখবেন সবগুলোই দূরের ফুটেজ, কোনো ক্লোজ ফুটেজ বা কারো স্পষ্ট ছবিও নেইনি। ভিডিও করার আগে যিনি টোল উঠাচ্ছে তার সাথে কথাও বলে নিয়েছিলাম।

এ সময় ঘাটের অদূরে বসা তিনজনের একজন জসীম উগ্রস্বরে জানতে চান কেনো ভিডিও করছি সাথে বাজে মন্তব্য করেন। তাদের কাছে গিয়ে ঘটনা বুঝাতে চাইলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হন এবং অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করতে থাকেন। তাদের দাবি ভিডিও করার আগে তাদের পারমিশন নিতে হবে, এছাড়া ঘাটে অনেক নারী থাকে আমি তাদের পারমিশন না নিয়ে কেনো ভিডিও করছি, একপর্যায়ে আমার মোবাইল ভেঙে ফেলার হুমকি দেয় এবং তাড়াতাড়ি এলাকা ছাড়তে বলে।

তাদের বোঝানোর চেষ্টা করি সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থাকায় কোনো পাবলিক প্লেসে ভিডিও করার নিয়ম আমি জানি। নারী এবং অন্যদের  বিষয়টিও যথারীতি মাথায় রেখে কাজ করি আমরা। তখন তারা ও জসীম জানতে চায় কীসের সাংবাদিক? 

অবস্থা বেগতিক দেখে আমি দ্রুত সেখান থেকে প্রস্থান করি। নাহলে মারধরেরও শিকার হতে পারতাম। হেনস্তার একপর্যায়ে সাংবাদিকের মা বোনকে এখানে নিয়ে এসে ভিডিও করা হবে বলেও বাজে ভাষায় বলেন জসীম, যা প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করে অভিযুক্ত। 

সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানায় গিয়ে অফিসার ইনচার্জকে অবগত করা হলে তিনি ছবি দেখে অভিযুক্তকে শনাক্ত করেন। মূল ভিডিও দেখালে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও নিশ্চিত করেন এখানে খারাপ বা আপত্তিকর কোনো কিছুর ফুটেজ নেই। তখন তিনি নিজে ও স্থানীয় এক প্রবীণ রাজনীতিকের মাধ্যমে জসীমের কাছে কারণ জানতে চাইলে তাদের সঙ্গেও অনমনীয় আচরণ করেন জসীম।

একপর্যায়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তবে তা উগ্রস্বরে। এমন একটি ভিডিও মিজানুর রহমান খবির তার সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। এ ব্যাপারে দক্ষিণ কেরনীগঞ্জ থানার ওসির সাথে মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সেক্রেটারি জসিমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সেখানে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি, তার ভিডিও করা দেখে অনেক যাত্রী এসে আমার কাছে আপত্তি জানালে, আমরা শুধু তাকে বারণ করেছি। মিজানুর রহমান খবিরের রেকর্ড করা ভিডিওতে তার উগ্র আচরণ ও কোনো যাত্রী তার কাছে যায়নি এমন প্রমাণ আছে বললে এ বিষয়ে তিনি সদূত্তর দিতে পারেননি।

ঘাটের সিসি টিভি ফুটেজ তার কাছে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তিনি আপাতত এলাকার বাইরে আছেন তাই ফুটেজ দিতে পারবেন না। 

পর্যটক হিসেবে এলাকায় যাওয়া সিনিয়র সাংবাদিকের সাথে ছাত্রলীগের নেতার এমন করায়, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। অতি দ্রুত অভিযুক্তের শাস্তির দাবিও জানান তারা। এদিকে স্থানীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসনের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জসীমের উগ্র আচরণের বেশ কিছু ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন।

এআর

Link copied!