দেশে প্রথমবারের মতো দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ‘আলু উৎসব ২০২৫’ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশন-এর আয়োজনে দুদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরা (আইসিসিবি), কুড়িল, ঢাকার হল নং-১ এ এ উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় উপদেষ্টা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জনাব শেখ বশির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব জনাব মাহবুবুর রহমান। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বোহুই-এর বোর্ড চেয়ারম্যান মিস শাহো (চীন), বিসিএসএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি জনাব ইশতিয়াক আহমেদ, সহ-সভাপতি জনাব মোহাম্মদ ইউনুছ, পরিচালকবৃন্দ, সিইও ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আলু উৎসব ২০২৫-এ বাংলাদেশে খাদ্য হিসেবে আলুর বহুমুখী ব্যবহার, রপ্তানি বৃদ্ধি, আধুনিক সংরক্ষণ প্রযুক্তি এবং আলু প্রক্রিয়াজাত শিল্প সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়। এতে দেশের কৃষি, আলু উৎপাদন, কোল্ড-চেইন ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত খাতের শীর্ষস্থানীয় উদ্যোক্তা, আলু চাষি এবং সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সারাদেশ থেকে প্রায় ৫০০ জন কৃষক এই আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নেন।
রংপুর জেলার আদর্শ কৃষক জনাব আসাদুজ্জামান কৃষকদের পক্ষে বক্তব্য রেখে পরিবেশবান্ধব আধুনিক কৃষিপদ্ধতি ও নিজের সফলতার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এ সময় সারাদেশ থেকে নির্বাচিত ১০ জন আদর্শ কৃষককে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে আলুর আধুনিক চাষাবাদ, হিমাগারে উন্নত সংরক্ষণ পদ্ধতি, প্রক্রিয়াজাতকরণ, ভ্যালু এডিশন, রপ্তানি, কোল্ড-চেইন প্রযুক্তি, কৃষি যন্ত্রপাতি এবং আলু থেকে তৈরি বিভিন্ন খাদ্যপণ্য প্রদর্শন করে দেশি-বিদেশি ৬৬টি প্রতিষ্ঠান।
পাশাপাশি আয়োজিত হয় আন্তর্জাতিক বিজনেস টু বিজনেস মিটিং এবং আলুর অভ্যন্তরীণ ব্যবহার, রপ্তানি ও ভ্যালু এডিশন নিয়ে দুটি প্যানেল সেশন। প্যানেল সেশন থেকে প্রাপ্ত সুপারিশসমূহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মেলার ইভেন্ট পার্টনার ছিল পোস্টমাস্টার কমিউনিকেশন।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, “অপ্রয়োজনীয় সার ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনলে উৎপাদন খরচ কমবে এবং মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব হবে।”
বিসিএসএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, “কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আলু কৃষকদের টিকিয়ে রাখতে পারলে চালের ওপর চাপ কমবে।” তিনি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, লেখনীর মাধ্যমে দেশব্যাপী আলু উৎসবের বার্তা ছড়িয়ে দিলে এ উদ্যোগ আরও সফল হবে।
প্রধান অতিথি শেখ বশির উদ্দিন বলেন, “আমাদের কৃষি সমাজকে কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে পারলে জাতীয় অর্থনৈতিক ব্যয় কমবে। আলু থেকে চিপস, স্টার্চসহ বহুমুখী পণ্য উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। শিল্প সক্ষমতা বাড়াতে ও উৎপাদন খরচ কমাতে মাঠপর্যায়ের কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা জরুরি।”
অনুষ্ঠানে আলু চাষে উৎসাহিত করতে কৃষকদের মাঝে ক্রেস্ট ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পরে আমন্ত্রিত অতিথিরা মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং আলু চাষ ও এর ব্যাপক সম্প্রসারণে কৃষকদের উৎসাহ প্রদান করেন।
এম
আপনার মতামত লিখুন :