বিএনপির প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত, যা ভাবছে দলটি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম
বিএনপির প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত, যা ভাবছে দলটি

ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ফেব্রুয়ারিতে ভোটের প্রস্তুতি জোরদার করছে বিএনপি। এরই মধ্যে দলটি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭টিতে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তবে ঘোষণার পরই বিভিন্ন আসনে মনোনয়নবঞ্চিতদের বিক্ষোভ, শরিকদের দাবিদাওয়া ও মাঠের চাপ মিলিয়ে দলটি এখন প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তনের বিষয়টি গুরুত্বসহ বিবেচনা করছে।

দলীয় সূত্র বলছে, প্রার্থী নির্বাচন ও আসন বণ্টন নিয়ে বিএনপি এখন বেশ চাপের মধ্যে। মনোনয়ন ঘোষণার পরই দেখা দিয়েছে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ। একই সঙ্গে শরিকদের তালিকা এত বড় যে, সেখান থেকে বোঝাপড়া করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। এই বাস্তবতায় দলটি কিছু আসনে প্রার্থী পরিবর্তন ও পুনর্বিন্যাসের ইঙ্গিত দিয়েছে।

জানা গেছে, পাঁচ দল ও দুই জোট মিলিয়ে বিএনপির কাছে এসেছে ১০৬ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা। এর সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চ চেয়েছে আরও ১৩৮টি আসন। সব মিলিয়ে শরিকদের দাবি দাঁড়িয়েছে ২৪৪। কিন্তু বিএনপি নিজেই ২৩৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ফলে বাকি অল্প কিছু আসন থেকেই শরিকদের মন রাখতে হবে-এই ভারসাম্যই এখন প্রধান সংকট।

স্থায়ী কমিটির নেতারা মনে করছেন, ভুল আসনে ছাড় দিলে নিজেদের শক্ত প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তার ওপর নির্বাচনী লড়াইয়ে জামায়াত এবার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এগোচ্ছে। ফলে কোথায় আসন ছাড়বে, কোথায় প্রার্থী বদলাবে-এ নিয়ে আরও কৌশলগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছে বিএনপি।

ইতোমধ্যে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলের ছয় নেতাকে নির্দিষ্ট আসনে কাজ করার দায়িত্ব দিয়ে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে আছেন আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, জোনায়েদ সাকি, নুরুল হক নুর, রাশেদ খাঁন এবং সৈয়দ এহসানুল হুদা। এছাড়া মৌখিকভাবে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিমকে।

জোটের ভেতরে কেউ কেউ এটিকে প্রার্থী বাছাইয়ের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। আবার অন্য অংশ মনে করছে, এটি মাঠপর্যায়ের সমন্বয় শক্তিশালী করার চেষ্টা। তবে উভয় ক্ষেত্রেই স্পষ্ট-বিএনপি প্রার্থী তালিকা নতুনভাবে যাচাই–বাছাই করছে।

জানা গেছে, ঢাকা–৮ আসনে মির্জা আব্বাসের সক্রিয়তা দেখে সাইফুল হকের সম্ভাবনা কমে গেছে। এমন কিছু আসন আছে যেখানে জোটসঙ্গীরা মনে করছেন, আন্দোলনের সময় তাঁদের গুরুত্ব ছিল, কিন্তু ভোটে এসে মূল্যায়ন কমে যাচ্ছে। এসব কারণেও বিএনপি প্রার্থী চূড়ান্ত করা নিয়ে আরও সতর্ক হচ্ছে।

জোটসঙ্গীদের অনেকে অভিযোগ করেছেন, মনোনয়ন চূড়ান্তে দেরির কারণে প্রচারণায় পিছিয়ে পড়ছেন তাঁরা। মাঠপর্যায়েও তৈরি হচ্ছে সমন্বয়হীনতা।

তবে বিএনপির নেতারা বলছেন, অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ সামলানো এবং জোটকে সন্তুষ্ট রাখা-এই দুই পথ মেলানোই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্যই প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, আসন বণ্টন নিয়ে কাজ চলছে এবং শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে।

সামগ্রিকভাবে, শরিকদের দাবিদাওয়া, অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ এবং নির্বাচনী বাস্তবতা মিলিয়ে বিএনপি যে প্রার্থী তালিকা পুনর্বিবেচনায় যাচ্ছে-এটিরই ইঙ্গিত এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

এসএইচ 

Link copied!