জামায়াত নেতার যে বক্তব্যে ক্ষোভে ফুঁসছে বিএনপি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০৮:৪৭ পিএম
জামায়াত নেতার যে বক্তব্যে ক্ষোভে ফুঁসছে বিএনপি

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহাজাহান চৌধুরীর বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়েছে। চলমান নির্বাচনি পরিস্থিতিতে প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ায় তাকে আইনের আওতায় আনার দাবিতে সরব হয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।

রোববার (২৩ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. এরশাদ উল্লাহ এবং সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের এক যৌথ বিবৃতিতে শাহাজাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। তাদের মতে, এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় জামায়াত নতুন করে আরেকটি ফ্যাসিবাদের পথ তৈরির চেষ্টা করছে। যদিও জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি সম্পূর্ণই শাহাজাহান চৌধুরীর ব্যক্তিগত মত, দলের কোনো বক্তব্য নয়।

চট্টগ্রাম বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, শাহাজাহান চৌধুরীর মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন, ষড়যন্ত্রপ্রসূত, ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং স্বৈরতান্ত্রিক। এমন বক্তব্য নির্বাচনি পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং গণতান্ত্রিক চর্চাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম। তারা দাবি করেন, প্রশাসনের প্রতি প্রকাশ্য হুমকি ও নির্বাচনি প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত গণতান্ত্রিক নীতি ও আচারের ওপর সরাসরি আঘাত হানে।

নেতারা আরও বলেন, এ ধরনের মন্তব্য নির্বাচনি শৃঙ্খলা ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে উত্তেজনাকর ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার পাশাপাশি সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশকে উত্তপ্ত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। তাদের অভিযোগ, এ বক্তব্য অতীতের দমননীতি ও স্বৈরাচারী অপশক্তির স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।

বিবৃতিতে তারা দাবি করেন, শাহাজাহান চৌধুরীকে তার রাজনৈতিক শালীনতাবিরোধী ও স্বৈরতান্ত্রিক বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে জনসম্মুখে ক্ষমা চাইতে হবে। একই সঙ্গে দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো, নির্বাচন ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এমন উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় তাকে আইনের আওতায় আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি জানায়, তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় আপসহীন থাকবে।

শনিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান অঞ্চলের নির্বাচনি দায়িত্বশীলদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শাহাজাহান চৌধুরী বলেন, নির্বাচনি এলাকায় প্রশাসনের সবাইকে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে এবং তাদের কথায় চলতে হবে। তিনি দাবি করেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষক, এমনকি পুলিশ ও ইউএনও পর্যন্ত সবাইকে জামায়াত প্রার্থীর সহযোগী হতে হবে। তবে এ সময় জামায়াতের আমির উপস্থিত ছিলেন না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের সাবেক আমির যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা তার একান্ত ব্যক্তিগত মত। জামায়াতের অবস্থান হলো, প্রশাসন পেশাদারিত্ব বজায় রেখে স্বাধীনভাবে কাজ করবে, কোনো দলীয় হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।

চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন শাহাজাহান চৌধুরীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত, আর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।

এসএইচ 

Link copied!