ছবি সংগৃহীত
ঢাকা: জাহান্নাম মানেই অভাবনীয়, অবর্ণনীয় ও অচিন্তনীয় শাস্তি। বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চিন্তা-চেতনার মান উন্নয়ন হয়েছে বটে কিন্তু অনেক মানুষেরই পরকালীন জীবন তথা জাহান্নামের ভয়াবহ আজাবের সম্যক ধারণা নেই। পরকালীন জীবনের অবস্থার সঙ্গে দুনিয়ার কোনো বিষয়ের যেমনি তুলনা হয় না তেমনি জাহান্নামের কঠিন শাস্তি দুনিয়ার শাস্তির সঙ্গে তুলনা করে বুঝানো সম্ভব নয়। জাহান্নাম হচ্ছে কেয়ামত-পরবর্তী অপরাধী বান্দাদের জন্য জ্বলন্ত এক অগ্নিকুণ্ডের নাম।
কিন্তু জানেন কি পৃথিবীতে জাহান্নামের দরজা নামে খ্যাত এক পর্যটন এলাকা রয়েছে! পৃথিবীর বুকে আবার জাহান্নামের দরজা আসলো কোথায় থেকে! তবে আপনি সৃষ্টিকর্তার তৈরি যে জাহান্নাম কিংবা দোযখের কথা ভাবছেন, এটি আদতেও তা নয়। এটি তুর্কিমেনিস্তান দেশের কারাকুমের মধ্যস্থলে দারবাজা নামক গ্রামের একটি জ্বলন্ত গুহা বা সুড়ঙ্গ যাকে বলা হয়, The Door to Hell বা জাহান্নামের দরজা।
এটা তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আসগাবাদ থেকে ২৬০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। আগে থেকেই প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ একটি এলাকা ছিল দারবাজা নামক এই স্থানটি। সেখানে অবস্থিত মরুভূমিতে বিশাল একটি গর্ত রয়েছে। এটি ২৩০ ফুট ব্যাস ও ৬৫ ফুট গভীর। গত চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই গর্তের আগুন নেভে না। ১৯৭১ সালের কথা। কয়েকজন সোভিয়েত ভূতত্ত্ববিদ খনিজ তেলের সন্ধানে কারাকুমের মরু অঞ্চলে অভিযান চালান।
মূলত তুর্কমেনিস্তানে অবস্থিত একটি খনিকে বলা হয় জাহান্নামের দরজা। প্রাকৃতিক গ্যাসের আধার এই খনিতে গ্যাস উত্তোলনের সময় একটি ড্রেজার খনির ভেতর পড়ে যায়। তখন মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পরিবেশ ক্ষতির আশংকা দেখা দেয়। তখন ক্ষতি এড়াতে খনিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ১৯৭১ সালের ঘটনা এটি। এরপর থেকেই জ্বলছে খনিটি।
কারণ এই এলাকায় প্রচুর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ রয়েছে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই সেই অভিযাত্রীরা টের পান, তারা ভূগর্ভস্থ গ্যাসের এক ভাণ্ডারের ওপর বসে আছেন। এ সময় মরুভূমির কয়েক জায়গায় গর্ত খুঁড়ে ভূগর্ভে থাকা গ্যাসগুলো উন্মুক্ত করেন তারা।
ঠিক তখন থেকেই সেখানে আগুন জ্বলতে শুরু করে। দেশটির কারাকুম মরুভূমি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দেরওয়াজ গ্রাম থেকে এটাকে দেখা যায়। এর আগুনের ভয়াবহতা দেখেই এটাকে জাহান্নামের দরজা’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।
তবে জায়গাটকে অনেকে শয়তানের সুইমিং পুল বলেও জানে। ২০১০ সালের এপ্রিলে দেশটির রাষ্ট্রপতি গুরবাঙ্গুলি বারদিমোহামেদো জায়গাটি পরিদর্শন করে তা বন্ধ করার আদেশ দেন। তবে সেই আদেশ কার্যকর হয়নি। এখনো সেখানে বছরের পর বছর দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছেই।
পরে এই বিশাল গর্ত থেকে ক্রমাগত নির্গত হতে শুরু করে মিথেন গ্যাস আর তার থেকে আগুন। এই আগুনের তাপ এত বেশি যে তার পাশে ২ মিনিটের বেশি দাঁড়ানো কিছুতেই সম্ভব নয়। আর এরপর থেকেই স্থানটির নাম জাহান্নামের দরজা।
ভিডিও:
সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই
আপনার মতামত লিখুন :