ঘুষ না দিতে পারায় সরকারি চাকরি মেলেনি ‘খর্বকায়’ আলী হোসেনের  

  • ইমতিয়াজ আমিন | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২১, ০২:৩৬ পিএম

ঢাকা: মো. আলী হোসেন। খর্বকায় (বামন) এক শিক্ষিত যুবক।রাজধানীর উত্তরার আজমপুর এলাকায় সড়কের ফুটপাতে চা-পানের অস্থায়ী দোকান তার। কথাবার্তায় বেশ চটপটে এবং স্মার্ট।

চা খেতে খেতে কথা হয় আলী হোসেনের সঙ্গে। বলেন ভবিষ্যতের কথা, স্বপ্ন সাজানোর পরিকল্পনা সেই সঙ্গে না পাওয়া বেদনার কথা।

আরও পড়ুন<<>>হাত-পা নেই, তবুও রং পেনসিলে স্বপ্ন দেখে রাসেল

দুই সন্তানের জনক আলী হোসেন ঢাকায় থাকেন দুই বছর ধরে। স্ত্রী-সন্তান গ্রামে রেখে রাজধানীর ফুটপাতে ব্যবসা করেন তিনি। বলেন, একা একা ঢাকায় থাকতে ভালো লাগে না।কিছু পুঁজি হলে গ্রামে চলে যেতাম, সেখানে ছোটখাটো ব্যবসা করে চলতাম।

সরকারি চাকরি করার খুব ইচ্ছা এইচএসসি পাস আলী হোসেনের। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে (এলজিআরডি) অফিস সহায়ক পদে পরীক্ষা দিয়ে টিকেও ছিলেন তিনি কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাকরিটা আর হয়নি। তার অভিযোগ, ঘুষ দিতে না পারায় সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তিনি।

আক্ষেপের সুরে বলেন, আমার মতো একটা মানুষের কাছেও ঘুষ চায়। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি এবং ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে দুই বার চাকরির পরীক্ষা দিয়েছি। লিখিত পরীক্ষায় টেকার পর বলে ৩ লাখ টাকা দিলে চাকরি হবে। আমার কাছে ৩ টাকাও নাই আমি কোথা থেকে ৩ লাখ টাকা দেব। 

তবে চাকরির বয়স থাকায় এখনও আশা ছাড়েননি আলী।যোগ্যতা অনুযায়ী একটা সরকারি চাকরি হলে সন্তানদের নিরাপদ ভবিষ্যত গড়ে দিয়ে যেতে পারতেন তিনি।

সমাজে খর্বকায় মানুষের অবস্থান এবং তাদের উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে কথা হয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহ জাহানের সঙ্গে।সোনালীনিউজকে তিনি বলেন, বামনরা প্রতিবন্ধীর আওতায় পড়ে। অসচ্ছল হলে তারা প্রতিবন্ধী হিসেবে সুযোগ-সুবিধা পাবেন। সরকারি চাকরিতে তাদের জন্য কোটা বরাদ্দ আছে। জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন তাদের নিয়ে কাজ করছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

ঘুষ চাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, তার মতো একজন মানুষের কাছে চাকরির জন্য ঘুষ চাইলে সেটা অবশ্যই ন্যাক্কারজনক কাজ।

জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উপসচিব খুরশিদ আলম চৌধুরীকে ফোন দিলে তিনি এই দায়িত্বে নেই বলে জানান।কিন্তু মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে নাম-পদবি-নম্বর রয়েছে উল্লেখ করলে, তিনি বলেন, ৫ বছর আগে আমি অন্য দায়িত্বে চলে গেছি।এখনও কেন নাম-পদবি আছে তা আমি জানি না। 

স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব ড. মলয় চৌধুরীকে ফোন দিলে তাকে পাওয়া যায়নি।
  
সোনালীনিউজ/আইএ

Link copied!