ঢাকা: ক্রিকেটে বড় দলগুলো ছোট দলগুলোকে আতিথিয়তা দিতে চায় না। এর পেছনে লাভ-ক্ষতি বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ শেষবার অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট খেলেছে সেই ২০০৩ সালে অজেয় স্টিভ ওয়াহর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলেছে আট বছর আগে। এই দুই দেশ সফর করা গেলেও পাশের দেশ ভারতে কখনই টেস্ট খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। দীর্ঘ আক্ষেপ ঘুচতে যাচ্ছে বাংলাদেশের, আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি।
এটা ঠিক, বড় দলগুলো ছোট দলগুলোকে আতিথিয়তা দেওয়ার আগে আর্থিক বিষয়টা চিন্তা করে। বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে খেললে যে দর্শক হবে তার চেয়ে বেশি হবে যদি সেখানে ভারত বা পাকিস্তান খেলে। তবে এবার আইসিসির নির্বাহী কমিটির সভায় যে পরিবর্তনের প্রস্তাব উঠেছে সেটা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের জন্য তা ইতিবাচকই হবে। এতে বড় দলগুলোর সঙ্গে বেশি করে খেলার সুযোগ থাকছে।
নির্বাহী কমিটি টেস্ট ক্রিকেটকে দ্বিস্তরে ভাগ করার পরিকল্পনা করছে। এরআগেও এ ধরণের আলোচনা হয়েছিল। তবে সেটা ছিল বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের। এবার যেরকম ভাবা হচ্ছে আদতে তাতে বাংলাদেশের লাভই হবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, সব দলই প্রায় সমান সুযোগই পাবে। ২০১৬ সালে দ্বিস্তর ক্রিকেটের যে প্রস্তাব উঠেছিল সেটা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল টেস্ট ক্রিকেট দলের মারাত্মক ক্ষতি হত। শেষ পর্যন্ত সেই দ্বিস্তর ক্রিকেট নীতি বাস্তবায়ন হয়নি। তবে এবারে যে প্রস্তাব এসেছে তাতে বাংলাদেশ টেস্ট র্যাংকিংয়ে নয়ে থাকার সুবাদে আছে প্রথম স্তরেই।
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী র্যাংকিংয়ে প্রথম নয়টি দল থাকছে প্রথম স্তরে। ১০ নম্বর দলের সঙ্গে আরও দুটি সহযোগী সদস্য দেশকে শর্ত সাপেক্ষে টেস্ট খেলার সুযোগ দিয়ে তৈরি হচ্ছে দ্বিতীয় স্তর। প্রথম স্তরে থাকা নয়টি দল সবাই একে অপরের মুখোমুখি হবে ঘরে ও প্রতিপক্ষের মাঠে। এতে বাংলাদেশ ঘরে আটটি এবং প্রতিপক্ষের মাঠে আটটি সিরিজ খেলার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়া এলে তারাও বাংলাদেশকে আতিথিয়তা দিতে বাধ্য থাকবে।
উদাহরণ স্বরুপ, ভারত সাড়ে ষোলো বছর পর বাংলাদেশকে টেস্ট খেলতে ডেকেছে। এই দ্বিস্তর প্রস্তাব পাস হলে সেটা আর করতে পারবে না ভারত। তখন বাধ্যতামুলকভাবে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানাতে হবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বড় দলগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা বাড়বে।
একই কথা প্রযোজ্য নতুন প্রস্তাবিত ১৩ দলের ওয়ানডে লিগের ব্যাপারেও। টেস্ট খেলুড়ে ১০ দলের সঙ্গে যোগ হবে আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তান। এদের সঙ্গে আরও একটি দল উঠে আসবে ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগ থেকে। তিন বছর ব্যাপী এই চক্রে সবচেয়ে কম খেলা দলও বছরে ১২টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। ওয়ানডে লিগের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতেই সরাসরি সুযোগ মিলবে বিশ্বকাপে খেলার। তাই দলগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনেক বেড়ে যাবে। অস্ট্রেলিয়া-ভারতের কাছেও তখন জিম্বাবুয়ে অনেক গুরুত্ব পাবে।
তবে এটা বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জও বটে। কারণ লিগের শেষ দল হলে বাংলাদেশকে পরের ধাপে নেমে যেতে হতে পারে। তখন বড় দলগুলোর সঙ্গে একইভাবে খেলার সুযোগ কয়েকগুন কমে যেতে পারে!
সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই/আরআইবি
আপনার মতামত লিখুন :