ঢাকা: মুসলিমদের তিন তালাক প্রথা অবৈধ ঘোষণা করেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। ভারত সরকার নতুন আইন না করা পর্যন্ত রায়টি নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে এ রায়টিকে দেশটির মুসলিম নারীদের জন্য প্রাথমিক বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিন তালাক প্রথাকে অধিকারের লঙ্ঘন বলে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তি দেখিয়ে আসছিলেন তারা।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) আদালতের এ রায়কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন অনেকে, তাদের মধ্যে ‘তিন তালাকের’ মাধ্যমে সংসার হারানো বেশ কয়েকজন মুসলিম নারীও রয়েছেন।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের তিনজনই তিন তালাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছেন। তবে অন্য দুজন সরকারকে নতুন আইন করার সময় দিতে ওই প্রথাটি ছয়মাসের জন্য নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত দেন।
সুপ্রিম কোর্টের ওই বিচারকরা হলো- প্রধান বিচারপতি খেহর, বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ, বিচারপতি রোহিন্তন ফালি নরিমান, বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত ও বিচারপতি এস আবদুল নাজির।
এতদিন দেশটিতে কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে মুখে তিনবার তালাক বললেই তাদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যেতো।
বিচারপতিদের মতে, এই নিয়ম ভারতীয় সংবিধানের ১৪ ও ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। এসব অনুচ্ছেদে নারী-পুরুষের সমতা, জীবন রক্ষা এবং ব্যক্তিগত অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে দেশটির মুসলিম নারী সংগঠন ইন্ডিয়ান মুসলিম ওমেনস মুভমেন্ট’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা জাকিয়া সোমান বলেন, এই রায় নারীদের জন্য খুবই খুশির দিন। এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। আমরা মুসলিম নারীরা আদালত থেকে ন্যায়বিচার পেয়েছি।
রায়ের পর্যবেক্ষণে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশের আইন উল্লেখ করে বলেন, যেহেতু ওইসব দেশে তিন তালাকের কোনো অনুমোদন নেই; তাই ভারতেও এ নিয়ম থাকা উচিৎ নয়।
দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, যদিও তিন তালাক বৈধ, তবে স্কাইপ ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তালাক পেয়ে কয়েকজন নারী এক হাজার ৪০০ বছর ধরে চলা এই প্রথাকে চ্যালেঞ্জ করেন।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম
আপনার মতামত লিখুন :