• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানসিক রোগীর সঙ্গে খারাপ আচরণ ফৌজদারি অপরাধ


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ১৬, ২০১৮, ০৪:৩০ পিএম
মানসিক রোগীর সঙ্গে খারাপ আচরণ ফৌজদারি অপরাধ

ঢাকা: মানসিক রোগীর সঙ্গে খারাপ আচরণকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ধরনের অপরাধের বিচারে প্রতিটি জেলায় একটি করে মানসিক স্বাস্থ্য আদালত প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। এমন বিধান রেখে মানসিক স্বাস্থ্য অধিকার আইন-২০১৮’র খসড়ায় চূড়ান্তর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। খসড়া আইন অনুযায়ী, মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা বা তার সম্পত্তির তালিকা প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে অবহেলা করলে অভিভাবক ও ব্যবস্থাপকদের অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে।

সোমবার (১৬ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী, মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত পেশাজীবী হিসেবে কোনো ব্যক্তির মানসিক অসুস্থতা সম্পর্কে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা সনদ দিলেও শাস্তি পেতে হবে। এ জন্য অনধিক ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া এ আইনের অন্য কোনো বিধান বা বিধি লঙ্ঘন করলে, লঙ্ঘনে সহযোগিতা করলে বা প্ররোচনা করলে অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা ছয় মাস কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে।

অভিভাবক বা ব্যবস্থাপক মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা বা সম্পত্তির তালিকা প্রণয়ন বা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে অবহেলা বা আদালতের কোনো নির্দেশ বাস্তবায়ন না করলে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

জিয়াউল জানান, কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীনে কোনো বিধান না মানলে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, ছয় মাস কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় একটি অধিদপ্তর গঠনের বিধান রেখে গত ৩ জানুয়ারি ‘মানসিক স্বাস্থ্য আইন’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

ওই দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছিলেন, কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি লাইসেন্সবিহীন মানসিক হাসপাতাল চালালে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা তিন বছরের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। একই অপরাধ আবার করলে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে। মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিকে অপরাধের কাজে ব্যবহার করলে প্ররোচনাকারীকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা দুই বছরের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে।

আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদনের সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের জন্য পরিচালক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে একটি অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হবে। জেলা পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য রিভিউ মনিটরিং কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে, যার সভাপতি হবেন জেলা প্রশাসক।

এই আইন কার্যকরের ৯০ দিনের মধ্যে যে মানসিক হাসপাতালগুলো আছে সেগুলোকে লাইসেন্স নিতে হবে। এই আইন লঙ্ঘন করলে শাস্তি পেতে হবে। বেসরকারি মানসিক হাসপাতাল স্থাপনের লাইসেন্স দেয়া, নবায়ন, ফি- এগুলো বিধি দিয়ে নির্ধারণ করা হবে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ২০০৫ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক মানসিক রোগী ১৬ দশমিক ০১ ভাগ। ২০০৯ সালে সমীক্ষা অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে মানসিক রোগী ১৮ দশমিক ৪ ভাগ। আগের আইনটি শত বছরের পুরনো। তাই নতুন করে একটি যুগোপযোগী আইন করা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!