• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় বদলে যাবে রাজনীতি


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১৮, ২০২০, ০২:১৪ পিএম
করোনায় বদলে যাবে রাজনীতি

ঢাকা : লড়াই এখন জীবিকা-চিকিৎসা ও বাঁচার। মানুষের স্বভাব-সংস্কৃতির অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। বিশেষ করে সমাজ, সরকার ও রাজনীতি। গত চার মাসে এ তিন শ্রেণির প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ পেয়েছে।

রাজনৈতিক নেতাদের চরিত্র এবং যোগ্যতা দেশের মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাই অনেকে মনে করছেন, করোনা মহামারির কারণে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে। সঠিক নেতৃত্বের প্রয়োজন দেখা দেবে। দুর্বল রাজনীতি পরিবর্তন হয়ে যাবে।

যোগ্য ও সাংগঠনিকভাবে দক্ষ নেতাদেরই মানুষ গ্রহণ করবে। নেতাদের কার্যক্রম সাধারণ মানুষও এবার নতুন করে মূল্যায়ন করবে। জনগণ এখন প্রকৃত দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকবে।

ফটোসেশন কিংবা যারা লোক ভাড়া করে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। আগামী দিনে তারা আর জনপ্রতিনিধি হতে পারবেন না। জনগণের পাশে না পাওয়া নেতাদের এখন আর কেউ গ্রহণ করবে না।

উচ্চ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, যোগ্যতা ও সততা এই করোনার মধ্যে যারা দেখাতে পেরেছেন তারাই টিকে থাকবেন মানুষের মাঝে। আর যারা ব্যবসায়িক স্বার্থে রাজনীতিতে সাময়িক এসেছেন তারা দূরে সরে যেতে বাধ্য হবেন। দুর্নীতিবাজ অযোগ্য ব্যক্তিরা আর কখনোই তরুণ প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।

এছাড়া যাদের ভেতরে ঐক্য আছে, দেশপ্রেম আছে এবং দেশের যে রাজনৈতিক দল ও নাগরিকসমাজ এক হয়ে কাজ করবে, তারা ঘুরে দাঁড়াবেন বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। রাজনৈতিক ঐক্য পছন্দ করা ব্যক্তিরাও অনন্য স্থানে থাকবেন।

এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। তাই সবাই দেশের যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে থাকে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনা, আম্ফান ও বন্যায় অসহায় মানুষের পাশে যারা ছিলেন তাদের ব্যক্তিত্ব ও যোগ্যতা প্রকাশ পেয়েছে। দেশের প্রতিটি মানুষ এই কাজের মূল্যায়ন করবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দলের এই সকল নেতাদের মূল্যায়ন করবেন।’     

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেছেন, ‘বৈশ্বিক মহামারিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে সকল রাজনৈতিক নেতা অসহায়, দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষের পাশে ছিলেন, তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী রাজনীতি করে। বিগত দিনে সেই কাজের ধারাবাহিকতা এখনো আছে। যদিও করোনার কারণে দলীয় কার্যক্রমে ধীরগতি ছিলো। কিন্তু আগস্ট মাসকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ফের চাঙা হয়েছে। আশা করি এই ধারাবাহিকতা আগামীতেও থাকবে।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, ‘কোনো রাজনৈতিক নেতা নিজের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য রাজনীতি করেন না। সাবই মানুষকে ভালোবেসে রাজনীতি করেন।

প্রত্যেক রাজনৈতিক নেতা মনে করেন, দেশের মানুষের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। নেতাদের কার্যক্রমে ভালো হলে সাধারণ মানুষও তাদের মূল্যায়ন করে। তখন নেতাদের প্রতিও সাধারণ মানুষের দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে থাকে। ভালো কাজ করলে প্রতিটি মানুষ রাজনৈতিক নেতাদের মূল্যায়ন করে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘পরিবর্তন সবসময় হয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি-পরবর্তী পরিস্থিতির সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতির সম্ভাবনা দেখছেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশে দেশে জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে, ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা বিধ্বস্ত হয়, নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভব এবং উদার গণতন্ত্র ও মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা শুরু হয়।

করোনার মহাদুর্যোগের পর এই অঞ্চলসহ দেশে দেশে কল্যাণরাষ্ট্রের উত্থানের একটা সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্লেষকরা। আর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যে বিষয়টা বলেছেন, তা তো দেশের মানুষ দেখেছে। কারা প্রকৃত দেশপ্রেমিক। জনগণ এখন প্রকৃত ব্যক্তিদের বেছে নেবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, ‘দেশে যেকোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে রাজনীতিবিদদের ওপর দায়টা একটু বেশি থাকে। কারণ তারা সবসময় জনগণের কল্যাণের জন্যই রাজনীতি করেন।    

মানুষের ভালো-মন্দ নিয়ে চিন্তা করেন, সুখে-দুঃখে পাশে থাকেন। তাই রাজনীতিবিদদের সেবামূলক কার্যক্রম কখনো বৃথা যায় না। একদিকে যেমন দলে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়, পাশাপাশি জনগণের কাছেও তারা জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!